ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:

আর  ছয়টি  পর্ব  আমার  লেখা  প্রকাশিত  হবে।  আরও অনেক  পর্ব  লেখার  রসদ  থাকলেও  আমার  ব্যক্তিগত  অসুবিধার কারণে  ২২৫ পর্বেই  শেষ হবে 'অতীত ঐতিহ্যের আতসে দুর্গাপর ' ধারাবাহিক।
           এই  ছয়টি  পর্বে  স্মরনীয়  ব্যক্তিত্ব, কিংবদন্তী  ও নদ নদীর বিষয়ক  তথ্য  প্রকাশিত হবে।  
           সাধক  কবি নীলকণ্ঠ  মুখোপাধ্যায় এর  সঙ্গীত গুরু  ছিলেন  জামবন  গ্রামের  গোপাল  রায়। তৎকালীন  সময়ে  এই  এলাকায়  ধ্রুপদ, খেয়াল ও মার্গ সঙ্গীতে তাঁর অসাধারণ  খ্যাতি  ছিল। তিনি  কৃষ্ণ  যাত্রায়  একটি  দল ও পরিচালনা  করতেন যাত্রাপালাও  লিখতেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ  পালা 'কালীয় দমন'।
              জনশ্রুতি, একদিন  ধবনী  গ্রামের  পাশ দিয়ে দুপুরবেলা  যাওয়ার সময় গানের  সুরে  মোহিত হয়ে  থমকে  দাঁড়ায়  গোপাল  রায়।  তিনি  দেখেন  একটি  কিশোর  গান গাইছে আপন মনে  মধুর  সুরে।  তার  কাছে  জানলেন  তার  নাম  লীলকন্ঠ  মুখোপাধ্যায়,  বাবার নাম  বামাচরন মুখোপাধ্যায়, মা  সরস্বতী  দেবী। গোপাল  রায়,  নীলকন্ঠের  মায়ের কাছে  অনুমতি  আদায়  করলেন  নীলকন্ঠকে  নিজ  গৃহে  রেখে  গানের  তালিম  দেবেন  সে  যাত্রা পালায়  অভিনয়  করবে। পরিবর্তে  নীলকন্ঠ  মাসিক পাঁচ টাকা  বেতন  পাবে। 
               নীলকন্ঠ  গোপাল  রায়ের  ললে  দুবছর  ছিলেন। এই  সময়ে  প্রচুর  সুনাম অর্জন  করেন। কিন্তু  গুরু শিষ্য এর  বিচ্ছেদ  ঘটে  মনোমালিন্য  এর  কারনে। তবে  গোপাল  রায়  না  থাকলে  সম্ভবতঃ  আমরা  কোনদিন  সাধক কবি নীলকণ্ঠ মুখোপাধ্যায় কে  পেতাম না। 
        প্রায়  দু'শ  বছর আগে  শাল  মহুয়া  পলাশ  পিয়ালের  বনে  ঢাকা  এক  প্রত্যন্ত  গ্রামে  গোপাল  রায়ের  মতো  সু সংস্কৃত  জ্ঞানের  অধিকরী  অসাধারণ  সংগীত শিল্পী  কৃষিজীবির  আবির্ভাব  ঘটেছিল।  আজ  ভাবলেও  অবাক লাগে। 
         ১৩০৮  বঙ্গাব্দের  ১ লা  বৈশাখ  এই  মহান  ব্যক্তির  তিরোধান  ঘটে। (চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours