ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
ভবানী পাঠকের নামে খ্যাত টিলাটি ভু-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০০ ফুট উঁচুতে অবস্হিত।টিলার দক্ষিণে গ্রান্টটাং রোড( বর্তমান ২নং জাতীয় সড়ক) টিলা থেকে রাস্তাটি সম্পূর্ণ দেখা যায়। দিল্লীর সম্রাট শের শাহ জি, টি, রোড নির্মাণ করেন। সেই সময় দামোদর নদ জি, টি, রোডের অনেকটা নিকটে ছিল বলে অনুমান করা হয়। কালের নিয়মে তার গতিপথ কিছুটা বদলেছে।
সেই সময় এই এই এলাকায় ডাকাতদের খুব উপদ্রব থাকলেও তারা সাধারণ মানুষের কোন ক্ষতি না করে উপকার করতো। ধনী অত্যাচারী জমিদার ও ইংরেজদের ধন সম্পদ লুট করে গরিবদের বিলি করতো। এই এলাকায় ডাকাতি করতো বাগদী, খয়রা, চুয়াড়, ডোম,হাড়ি,কৈবর্ত।এদের দলপতি একজন ব্রাহ্মণ।
জনশ্রুতি, বিশে ডাকাতের আস্তানা ছিল এই এলাকায়। তবে সিটি সেন্টারের টিলা সহ নিকটস্হ পুকুরটি ঘিরে রহস্য ছিলো। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় কয়েক বছর আগে জুলাই ২০০৭-এ একটি বাড়ী নির্মাণ করার সময় মাটির এক ফুট নীচে ৫৫ ফুট দীর্ঘ সাড়ে ৫ ফুট উচ্চতা এবং ২ ফুট প্রসস্হ একটি সুড়ঙ্গ আবিস্কৃত হওয়ায়।সুড়ঙ্গ টি কে এবং কি উদ্দেশ্যে নির্মাণ করেন তা জানা না গেলেও নির্মাণশৈলীতে প্রযুক্তির ব্যবহার হওয়ায় এটি স্হানীয় নৃপতি নির্মাণ করেছেন বলেই অনুমেয়। সুড়ঙ্গটি নির্মানে নরম ও শক্ত দু'ধরনের বেলে পাথর,চুন সুরকি ও গাছের আঠাল রস ব্যবহার করা হয়েছে।
সুড়ঙ্গটি নিকটস্হ পুকুরটিতে শেষ হয়েছে। পুকুরটিকে বলা হয় ' ইছাই সাগর ' 'পীর পুকুর ' বা' 'পূত পুকুর '।পুকুরটির এরূপ নাম করনের কারন সম্ভবতঃ বহুপুর্বে এখানে বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের প্রসার ঘটেছিল। সেই সময় কোন নৃপতি এই পুকুর খনন করেন। পূত শব্দের অর্থ পবিত্র। পূত- ই অপভ্রংশ হয়ে 'পীর ' হতে পারে। তবে ' ইছাই সাগর ' নাম করনের পশ্চাতে যুক্তি হ'ল, ত্রিষষ্টি গড়ের অধিপতি ছিলেন ইছাই ঘোষ। সম্ভবতঃ তিনি পুত পুকুর নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম করন করেন 'ইছাই সাগর ' অথবা তিনি নিজেই এই পুকুরটি খনন করান। (চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours