সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ:

মনে কি পড়ে? 
ফোনে কত বকাবকি করতে আবার কখনও তোমার গলা ভিজে যেত। কিছু সময় না পেলেই তোমার দুটো চোখ ছলছল করে উঠতো।
মনে কি পড়ে?
তুমি মান্না দে বা জগজিৎ সিংয়ের গান কি ভালই না বাসতে। সেই সেই গানটা গো। তুমকো দেখা তো ইয়ে খেয়াল আয়া...। সেকি অভিব্যক্তি তোমার। পাগল হয়ে যেতে গো তুমি।
মনে কি পড়ে?
হাই প্রসারের মধ্যে লোভ সামলাতে না পেরে গাদাগুচ্ছেক খাঁসির মাংস না জানিয়ে খেয়েছিলাম বলে তুমি রাতে অর্ধেক রুটিতে ডিনার সেরে ছিলে। স্রেফ আমার উপর অভিমান করে।
মনে কি পড়ে?
আমি তোমার অবাধ্য হতামই না। যা করতাম তোমার অনুমতি নিয়েই। তুমি হেসে বলতে, এত কথা শোনার কি আছে। নিজেও তো সিদ্ধান্ত নিতে পারো নাকি। এমন স্ত্রৈণ আমারই কপালে জুটবে ভাবিনি। তুমি আমায় খুব জ্বালাও। খুবই।
মনে কি পড়ে?
কলকাতার আকাডেমি অব ফাইন আর্টসে একসঙ্গে ছবি দেখা। ছবি নিয়ে কথা বললে তুমি চুপ করে শুনতে। দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হলেও। আমার জন্য স্রেফ আমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলে।
মনে কি পড়ে?
রাতে তুমি যখন শুতে আমিও তখনই শুয়ে পড়তাম। এতটুকু অন্যথা হতো না। আবার সকালে তোমার ডাকেই আমার ঘুম ভাঙা।
মনে কি পড়ে?
সারাদিন তোমার বন্ধনে আমি জড়িয়ে থাকতাম। অফিসে গেলেও তোমার আমার ম্যাসেজ সমানে চলতো। একটু দেরি হলেই হল তোমার সেকি ছটপটানি। সেকি অভিমান। 
মনে কি পড়ে?
তুমি যেগুলো খেতে খুব খুব ভালবাসতে সেগুলো আমি খেতামই না। আজও তা খাই না। আসলে সেগুলো খেতে ইচ্ছে করলেই যে তোমার মুখ মনে পড়ে। খেলে হয়তো মনে পড়তো না। এটাও বুঝি একটা প্রেম বলো। তুমি অবাক হয়ে যেতে। শেষে তো তুমি বলতেই না তোমার প্রিয় খাবারের তালিকা। হাহাহা।
মনে কি পড়ে?
তুমি না বলতে আমাদের প্রেম হল স্বর্গীয়। হ্যাঁ সোনা সত্যি আজও স্বীকার করি, তোমার মতো এত গভীর গহণ বন্য ভালবাসা আজও একক বিষ্ময়। হয়তো তাই তুমি আজও আমার শেষ স্পর্শিতা নারী।
মনে কি পড়ে?
তুমি আমায় হামেশাই বলতে, আমি এমন সর্বত্যাগী প্রেম জীবনে দেখিনি। তুমি অপাত্রে এই অমৃত প্রেম দান করে দিলে। মানুষের মন পরিবর্তন হতে কতক্ষণ। এও তুমি বলতে তাই না? 
মনে কি পড়ে?
আমরা একবার ভাবলাম আমাদের তো মেয়ে আছেই। একটা ছেলে হলে খারাপ হতো না। নাম ঠিক করলাম দুজনে। ত্রিশান। দুজনের নামের সামঞ্জস্যে। কি যে হলো হঠাৎ। সে আর অঙ্কুরিত হলো না। আর সে সুযোগ দিলে কই? 
মনে কি পড়ে?
তোমার সিঁথিতে আমার লাল টকটকে সিঁদুর। চোখে কাজল। ঠোঁটে লিপস্টিক। উফ্ পাগল হয়ে যেতাম। এগুলো আমার রোজ দেখা চাইইই। নেশা লাগতো মনে। শরীর ঘিরে আসতো জোয়ার। আসলে তুমিই যে আমার একমাত্র জগৎ। আমার জীবন বিশ্ব। আজও তাই গো। 
মনে কি পড়ে?
সব দিক থেকেই তুমি কি ভীষণ সৎই না ছিলে। আমিও আমার প্রেমে শুধুই তুমি আর তুমি ছিলাম। কথা দিয়েছিলাম যে। তুমি আমার একক নারী আমার একক অধীশ্বরী হবে। আমি কথার মান্যতা আজও রেখেছি। এটা ঠিক তুমি আমার থেকে ছিলে বহুগুন সাহসী। তাই আমাদের নিজস্ব সম্পর্ক গুলো অনায়াসে সহজ করে নিতে পারতে। নিমেষে। রিয়েলি খুব মিস করি ফেলে সেই মূহুর্তগুলি।
মনে কি পড়ে?
তোমার মধ্যেই নিজের মায়ের স্মৃতির আচরন খুঁজে ফিরতাম। তাই তোমাকে শ্রদ্ধাও করে এসেছি অবচেতন মাতৃ ছায়ায়। তুমি নিজেও বিস্মিত কম হতে না। সেই শ্রদ্ধা কিন্তু আজও অক্ষত জানো।
মনে কি পড়ে? 
আমরা কি ড্রেস পরবো তা রোজ আলোচনা করতাম। তুমি আবার ড্রেস নিয়ে খুব সজাগ ছিলে। তোমার পছন্দেই ছিল আমার পোষাক পরা। 
মনে কি পড়ে? 
তুমি কি রেগে যেতে অল্পতেই। তবু দিনের শেষে মানে রোজ রাতে বলতে তুমি শুধু আমার হবে। আই লাভ ইউ। আই কিস ইউ। আই ওয়ান্ট ইউ। প্রতি রাতেই তাই না বলো? 
আর আজ আমার মনে পড়ে! 
আজ আমার বড্ড মনে পড়ে তোমাকে গো। শুধুই তোমাকে মনে পড়ে। প্রতিদিন। সবসময়। আসলে ভালবাসা ভোলা যায়। স্বর্গ প্রেম ভোলা যায় না গো। তাই তো তোমায় বলতাম তুঁহু মম জীবন তুঁহু মম মরণ। তুঁহু মম শ্যামও সমান। যদিতং হৃদয় তব...। তুমিও কি হাসতে শুনে। বলতে তুমি এত ভালবাসতে পারো কি করে। 
আর আজ আমার মনে পড়ে। 
তুমি যে আমার একটা আস্ত পৃথিবী। তুমি ছাড়া আমি যে আজও অস্তিত্বহীন। তাই তোমার সেই আকাশী রংয়ের কুর্তি পরা ছবিটা। সেই ছবিটা গো। তোমার চোখে কাজল পরা প্রথম ছবিটা। যা আমার জন্য তুলেছিলে। সেটাকেই পুজো করি রোজ। আজও করেছি। কালও করবো। 
আর আজ আমার মনে পড়ে। 
আজ আমার সেই গানটা নিত্যসঙ্গী। জগন্ময় মিত্রের সেই অবিস্মরণীয় গান। তুমি আজ কত দূরে...কিগো শুনছো, কোথায় তুমি? জানো চিৎকার করে শুধু ডাকতে ইচ্ছে করে তোমাকে। এসো না গো। জানো সোনা আমার গলায় আজও একটা ডাক আটকে আছে। বড্ড দম বন্ধ হয়ে আসে সেই অস্ফুট ডাকে। ত্রিশান...
 

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours