দীপ্তেন্দু চক্রবর্তী, প্রবাসী লেখক, টরোন্টো, কানাডা:
আমেরিকাতে বহু ভারতীয় থাকে। গুজরাটি, পাঞ্জাবি বেশির ভাগ।আমাদের কানাডাতেও একই রকম। শুধু শিখেরা এসেছিলো একশো বছরেরও আগে। দেশটা ছিল ইন্ডিয়ান নেটিভদের। তারপর এলো ফরাসিরা আর ব্রিটিশরা। কুইবেক প্রদেশ ফরাসিদের। অন্টারিও বা আলবার্টা, বা অন্য সব প্রদেশ ব্রিটিশদের। এখন কোনো ভাগ নেই।ব্রিটিশদের হাডসন বে কোম্পানির ব্যবসা ছিল ইন্ডিয়ানদের কাছে থেকে চামড়া কেনা। ফার। একটা নীল শেয়ালের চামড়ার কোট তিরিশ লক্ষ টাকা বা তারও বেশি। মিংক বলে বেজির মতো একটা জন্তু হাজারটা মেরে একটা মেয়েদের মিংক কোট বানানো হয়। সেই কোট পরে রানী এলিজাবেথ বা লিজ টেলর পার্টিতে যান। আলাস্কা অঞ্চলে বরফের ওপর প্রচুর শীল থাকে। নিরীহ প্রাণী। বাছা শীলদের চামড়া দুধের মতো সাদা হয়। ব্যবসায়ীরা জাহাজ নিয়ে এদের মেরে চামড়া খুলে নেয়। সাদা বরফ রক্তে লাল হয়ে যায়। মুগুর দিয়ে মাথায় মারে। আমরা চোখ বন্ধ করে দেখি। এখন গ্রিন শিল্ড বলে একটা প্রতিষ্ঠান এই নিষ্ঠুরতা বন্ধ করার জন্য যুদ্ধ চালাচ্ছে বহুদিন ধরে। ওরা বাচ্ছা শীলদের গায়ে লাল রং বা কালো রং ছিটিয়ে দেয়।এই রং দেওয়া চামড়ার কোনো কাজে লাগে না। জাপানিদের হাঙ্গর মারাও এরা বন্ধ করে দিচ্ছে। রেস্তোরাতে সার্ক ফিন সুপ্ বিক্রি হয়। তার অসম্ভব দাম। জাপানিরা বিরাট হাঙ্গর ধরে শুধু তাদের পাখনা কেটে জলে ফেলে দেয়। এ এক প্রথম বিশ্ব যার সঙ্গে ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের কোনো মিল নেই।
আমরা নাকি পৃথিবীর বৃহত্তর গণতন্ত্রের দেশ? তা সত্যিই। নাগরিকরা রৌদ্র বৃষ্টিতে ভিজে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে দেখে যে তার ভোট কেষ্ট আরাবুলরা দিয়ে দিয়েছে।বিশ্বের কোনো দেশের লোকসভায় কোনো অভিযুক্ত বা অপরাধী পাবেন না। এদেশের কোন দল কোনো অভিযুক্তকে দলে নেবে না। আর আমাদের লোকসভায় একশো আশিজন বা ওরকম; অপরাধীরা আমাদের শাসন করে। কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনি। কংগ্রেস, বিজেপি সবার অপরাধী সাংসদ আছে। অজুহাত হচ্ছে ওদের এখন কোনো সাজা হয়নি। সব মামলা চেপে দেওয়া হয়। ভাবতে পারেন এদেশে পুলিশ সরকারি অধীনে নয়? ওরা স্বাধীন দপ্তর। একজন কনস্টেবলের ক্ষমতাই সব। সে যা করবে সেটাই গণ্য করা হবে। শুধু অপরওয়ালারা দেখে সে আইন সঙ্গত ভাবে কাজটা করছে কিনা? কোনো প্রধানমন্ত্রী বা সাংসদের পিতার ক্ষমতা নেই ওর সাথে কোনো কথা বলার। কত মন্ত্রীকে হাতকড়া পরিয়ে হাজতে পুরেছে পুলিশ এদেশে। আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দুটো ঘটনা বলি। একটা ঘটনা হলো মন্ট্রিয়লে ওর ছেলে বান্ধবীকে "ডেট রেপ" করেছিল। অর্থাৎ রাত্রে মেয়েটি সেইদিন আপত্তি জানিয়েছিল। তা সত্ত্বেও ছেলেটি শোনেনি। তাকে বলে অসম্মতি করার ধর্ষণ। স্ত্রীর ক্ষেত্রেও সেটা প্রযোজ্য এদেশে। প্রধানমন্ত্রী জন আর ওর স্ত্রী রোজ বসে থাকতো মামলার দিন জাজের সামনের বেঞ্চিতে। একদিন জাজ সাহেব খিস্তি করে ভুত ভাগিয়ে দিলো । -তুমি দেশের প্রধানমন্ত্রী, মামলার দিন তোমরা আমার সামনে বসে থাকো কেন? আমাকে পটাতে?- লজ্জায় মুখ ঢেকে জন ক্ষমা চেয়ে পালিয়ে বেঁচে ছিল। আরেকবার জন নাগরিকের গলা চেপে ধরেছিলো তার কাছে এসে প্রতিবাদ করার জন্য। জনকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়েছিল। নাগরিকের গায়ে কেন হাত দিয়েছিলো? তবে জাজ সাহেব জনকে ছেড়ে দেয় আত্মরক্ষার খাতিরে। কি করে একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে চলে যেতে পারে? বলবো এদেশের আইন কানুনের কথা। বুঝবেন কেন আমরা তৃতীয় বিশ্বের মানুষ? আর এরা এতো শক্তিশালী উন্নত? (ক্রমশঃ)
(ছবি প্রাপ্তি: প্রতিবেদক। ছবিতে এক পারিবারিক মূহুর্তে প্রয়াত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রতিবেদক)
আমেরিকাতে বহু ভারতীয় থাকে। গুজরাটি, পাঞ্জাবি বেশির ভাগ।আমাদের কানাডাতেও একই রকম। শুধু শিখেরা এসেছিলো একশো বছরেরও আগে। দেশটা ছিল ইন্ডিয়ান নেটিভদের। তারপর এলো ফরাসিরা আর ব্রিটিশরা। কুইবেক প্রদেশ ফরাসিদের। অন্টারিও বা আলবার্টা, বা অন্য সব প্রদেশ ব্রিটিশদের। এখন কোনো ভাগ নেই।ব্রিটিশদের হাডসন বে কোম্পানির ব্যবসা ছিল ইন্ডিয়ানদের কাছে থেকে চামড়া কেনা। ফার। একটা নীল শেয়ালের চামড়ার কোট তিরিশ লক্ষ টাকা বা তারও বেশি। মিংক বলে বেজির মতো একটা জন্তু হাজারটা মেরে একটা মেয়েদের মিংক কোট বানানো হয়। সেই কোট পরে রানী এলিজাবেথ বা লিজ টেলর পার্টিতে যান। আলাস্কা অঞ্চলে বরফের ওপর প্রচুর শীল থাকে। নিরীহ প্রাণী। বাছা শীলদের চামড়া দুধের মতো সাদা হয়। ব্যবসায়ীরা জাহাজ নিয়ে এদের মেরে চামড়া খুলে নেয়। সাদা বরফ রক্তে লাল হয়ে যায়। মুগুর দিয়ে মাথায় মারে। আমরা চোখ বন্ধ করে দেখি। এখন গ্রিন শিল্ড বলে একটা প্রতিষ্ঠান এই নিষ্ঠুরতা বন্ধ করার জন্য যুদ্ধ চালাচ্ছে বহুদিন ধরে। ওরা বাচ্ছা শীলদের গায়ে লাল রং বা কালো রং ছিটিয়ে দেয়।এই রং দেওয়া চামড়ার কোনো কাজে লাগে না। জাপানিদের হাঙ্গর মারাও এরা বন্ধ করে দিচ্ছে। রেস্তোরাতে সার্ক ফিন সুপ্ বিক্রি হয়। তার অসম্ভব দাম। জাপানিরা বিরাট হাঙ্গর ধরে শুধু তাদের পাখনা কেটে জলে ফেলে দেয়। এ এক প্রথম বিশ্ব যার সঙ্গে ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের কোনো মিল নেই।
আমরা নাকি পৃথিবীর বৃহত্তর গণতন্ত্রের দেশ? তা সত্যিই। নাগরিকরা রৌদ্র বৃষ্টিতে ভিজে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে দেখে যে তার ভোট কেষ্ট আরাবুলরা দিয়ে দিয়েছে।বিশ্বের কোনো দেশের লোকসভায় কোনো অভিযুক্ত বা অপরাধী পাবেন না। এদেশের কোন দল কোনো অভিযুক্তকে দলে নেবে না। আর আমাদের লোকসভায় একশো আশিজন বা ওরকম; অপরাধীরা আমাদের শাসন করে। কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনি। কংগ্রেস, বিজেপি সবার অপরাধী সাংসদ আছে। অজুহাত হচ্ছে ওদের এখন কোনো সাজা হয়নি। সব মামলা চেপে দেওয়া হয়। ভাবতে পারেন এদেশে পুলিশ সরকারি অধীনে নয়? ওরা স্বাধীন দপ্তর। একজন কনস্টেবলের ক্ষমতাই সব। সে যা করবে সেটাই গণ্য করা হবে। শুধু অপরওয়ালারা দেখে সে আইন সঙ্গত ভাবে কাজটা করছে কিনা? কোনো প্রধানমন্ত্রী বা সাংসদের পিতার ক্ষমতা নেই ওর সাথে কোনো কথা বলার। কত মন্ত্রীকে হাতকড়া পরিয়ে হাজতে পুরেছে পুলিশ এদেশে। আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দুটো ঘটনা বলি। একটা ঘটনা হলো মন্ট্রিয়লে ওর ছেলে বান্ধবীকে "ডেট রেপ" করেছিল। অর্থাৎ রাত্রে মেয়েটি সেইদিন আপত্তি জানিয়েছিল। তা সত্ত্বেও ছেলেটি শোনেনি। তাকে বলে অসম্মতি করার ধর্ষণ। স্ত্রীর ক্ষেত্রেও সেটা প্রযোজ্য এদেশে। প্রধানমন্ত্রী জন আর ওর স্ত্রী রোজ বসে থাকতো মামলার দিন জাজের সামনের বেঞ্চিতে। একদিন জাজ সাহেব খিস্তি করে ভুত ভাগিয়ে দিলো । -তুমি দেশের প্রধানমন্ত্রী, মামলার দিন তোমরা আমার সামনে বসে থাকো কেন? আমাকে পটাতে?- লজ্জায় মুখ ঢেকে জন ক্ষমা চেয়ে পালিয়ে বেঁচে ছিল। আরেকবার জন নাগরিকের গলা চেপে ধরেছিলো তার কাছে এসে প্রতিবাদ করার জন্য। জনকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়েছিল। নাগরিকের গায়ে কেন হাত দিয়েছিলো? তবে জাজ সাহেব জনকে ছেড়ে দেয় আত্মরক্ষার খাতিরে। কি করে একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে চলে যেতে পারে? বলবো এদেশের আইন কানুনের কথা। বুঝবেন কেন আমরা তৃতীয় বিশ্বের মানুষ? আর এরা এতো শক্তিশালী উন্নত? (ক্রমশঃ)
(ছবি প্রাপ্তি: প্রতিবেদক। ছবিতে এক পারিবারিক মূহুর্তে প্রয়াত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রতিবেদক)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours