দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে/ বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে...এই ভাবনা নিয়ে কোপাই নদীর ধারকে সাজিয়ে তুলেছে কলাভবনের প্রাক্তনীরা। কোথাও, ঝুড়ি, কোথাও বাঁশের আঁশ, কোথাও জাল দিয়ে সাজানো প্রকৃতিকে!

ছোট বেলার সেই ছড়ায় শান্তি নিকেতনের কলাভবনের প্রাক্তনীদের ভাষ্কর্যের ভাষা। যা খুঁজে পাবেন কোপাই নদীর তীরে। সে যেন কবির কথায়-- তোমায় সাজাব যতনে কুসুমে রতনে
কেয়ূরে কঙ্কণে কুঙ্কুমে চন্দনে।।
শোনা যায় নদীর বাঁকে আলোর লুকোচুরি খেলায় মেয়েদের কোমড়ের হারের মত কোপাই নদীর হাঁসুলি বাঁক! তাকে নিয়ে কত ইতিকথা!
নদী বয়ে চলে আপন মনে। কে শোনে তার কথা! তার  চলমান জীবনের কত না জানা কথা ফুটে উঠেছে ভাষ্কর্যের অনাস্বাদিত সৌন্দর্যে। প্রাকৃতিক উপাদানে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে কোপাই নদীর ধার। আর এই কাজে হাত লাগিয়েছে কলাভবনের প্রাক্তনীরা। আশীষ ঘোষ, আশীষ মাজি, অমিয় নির্মল ধারা, সন্দীপ বাউল, বিমলেন্দু রায়, অন্নপূর্ণা মণ্ডল, সন্যাসী লোহার, তাপসী রাণী ঘোষ, মাধব দে ও বোরহান হাঁসদার চিন্তা ধারার ফসল, এই সৌন্দর্যায়ন।
এ যেন, কবির কথায়,---- ছেড়েই দিতে রাজি আছি
সুসভ্যতার আলোক,
...ছেড়েই দিতে রাজি আছি
 সুসভ্যতার আলোক..
শিল্পীদের কথায়--- সভ্যতার প্রভাব শান্তি নিকেতনের মাঠেঘাটে। নদীর গুরুত্ব হারিয়েছে আমাদের জীবনে।
কলাভবনের এই প্রাক্তনীরা মিলে কোপাই নদীর ঐতিহাসিক ও ধার্মিক গুরুত্ব অপরিসীম।‌ এই নদীর জলেই হয় চাষবাস।
এই নদীর গুরুত্ব মানুষের কাছে তুলে ধরতে এই প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি করা হয়েছে ভাষ্কর্য।‌ বাসন্তিক উৎসবমুখর প্রকৃতিকে বরণ করে নিতেই এই প্রচেষ্টা।
জানা গেছে, এই নদী তীরবর্তী এলাকায় বাস করতেন তালতোরের জমিদার ও আদিবাসীরা।‌ কোপাই নদী প্রেরণা দিয়েছে তারা শঙ্কর বন্দোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours