ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:

দ্বিতীয়   ঐ ফরিদপুরেই  ধানকা  গ্রামের  জয়ন্তী  দেবী! এক  বিদুষী  নারী, সপ্তদশ  শতকে   তাঁর  জন্ম! তাঁর  স্বামী  তৎকালীন  পন্ডিতবর  কৃষ্ননাথ  সার্বভৌম!কাব্য, ন্যায়,ব্যকরন  ও অলঙ্কার শাস্ত্রে  সুপন্ডিতা  জয়ন্তী  দেবী  ও তাঁর  স্বামী  কৃষ্ননাথ  সারভৌম  যৌথভাবে রচনা  করেন  একটি  চম্পৃকাব্য 'আনন্দলতিকা '! এই  বিদূষী  জয়ন্তীদেবী  বিশ্বাস  করেন  নি  এই  অর্বাচীন  যুক্তি - ' স্ত্রীলোক  সাক্ষর  হ'লে অকাল বৈধব্য  প্রাপ্ত  হয়!'
          হটীর  তৃতীয়   উদাহরনঃ দ্রবময়ী  দেবী! কৃষ্ননগরের  খানাকুলের  নিকটস্হ  বেড়াবাড়ী  গ্রামের  সাত্বিক  ব্রাক্ষ্মন  শ্রীযুক্ত  তর্কলঙ্কারের  কন্যা দ্রবময়ী বলিকা  বয়সে  বিধবা  হয়ে পিতার  টোলে   পুরান, মহাভারত, ভাগবৎ  সহ  সর্বশাস্ত্রে  সুশিক্ষিতা  হয়ে পিতার  বার্ধক্যের  কারনে  মাত্র  চৌদ্দ  বছর  বয়সে  পিতার  টোলে ১৫-১৬  জন  সমবয়সী  ছাত্রদের  কিঞ্চিৎ  দুরে  বসে  শিক্ষাদান  করতেন!নাবালিকা  পন্ডিতাকে  পরীক্ষা  করতে  প্রায়ই  পন্ডিতরা  সমবেত  হতেন  এবং  পৃথকাসনে  বসে  অবগন্ঠিতা  হয়ে  দ্রবময়ী  তাঁদের  সাথে  তর্ক-যুদ্ধে  অবতীর্ন  হতেন! তাঁরা  প্রায়  প্রত্যেকেই  স্বীকার  করতে বাধ্য  হতেন  যে, দ্রবময়ী পিতার  চতুষ্পাঠী  পরিচালনা  করার  উপযুক্তা!
      এরপর  হটী  বিচারক  তথা  কাশীধামের  পন্ডিত  সমাজের  নেতৃস্হানীয়  মহোপাধ্যায়দের   উদ্দশ্যে  করজোড়ে  নিবেদন  করলেন," 'নারী-শিক্ষার' এই  রুদ্ধদ্বারটি  আপনারা  উন্মুক্ত  করে  দিন! নারী  সমাজকে  কুপমন্ডুক  করে  গৃহবন্দী  করে  রাখলে  সমাজের  সামগ্রিক  উন্নতি  ব্যাহত  হতে  বাধ্য! অশিক্ষা, বাল্যবিবাহ  রোধ  করা  একান্ত২ প্রয়োজন! বাল্যবৈধব্য  আর১ সহমরন  প্রথার  বীভৎসতা  গ্রাস করে  হিন্দু ধর্মকে  ক্রমশঃ মৃত্যুমুখে  পতিত  করছে!
        বিচারক  মন্ডলী  পন্ডিতত্রয়  সমবেতভাবে  বিধান  দিলেন! শুধুমাত্র  নারীজন্ম  নিয়ে  পৃথিবীতে আবির্ভূতা  হওয়ার  অপরাধে  কারও  বিদ্যার্জন  ও বিদ্যাচর্চা  বা বিদ্যাদানের  অধিকার  থেকে  বঞ্চিত  করা  যায়  না!
(চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours