জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা, দুর্গাপুর:

সামাজিক উৎপাদনে উদ্বৃত্তের জন্মের সাথে সাথে যেমনভাবে নগরসভ্যতার আবির্ভাব ঘটে , যদি মেনে চলা হয়, তেমনভাবেই জাতীয়তার ভ্রুনটির জন্মে হয়ে যায়, সামন্তিক কিংবা তারো আগে দাস সভ্যতাতেই।

ইতিহাসের বিকাশের সাথে সংগতি রেখে যারা জাতীয়তা এবং প্রজাতন্ত্রের অন্তমম্পররের গতমুখ ধরে যে দার্শনিকরা  নৃ্তত্বের বিকাশ ধারার সাথে সংগতি রেখে
--------জাতীয়তার প্রতিরুপের সাথে   সাথে প্রজাতন্ত্রনের অন্তসম্পর্কগুলি  বিচারে ইতিহাসের গভীরতা মেপেছেন এবং  সেই সুত্র  ধঢ়ে,  দর্শনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা ধরেন তারাই শেসব গুঢ়তত্বে ,
---- শেষ কথাগুলিকে  নিশ্চিতভাবে একদিন প্রমান করবেন।

 তবে বর্তমান লেখক, তার নিজ প্রয়োজনে,
 Trial & Error, বা সঠিক ও বেঠিকতার ওজন করতে করতে, ভারতে  ইতিহাসের অভিমুখে, মেহনত ও মেহনতীর দায়বদ্ধতা নির্ধার্নে
----, উল্লেখিত দুটি উপাদানের সম্ভাবনা এবং দায়বদ্ধতা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। খুব সুক্ষ বিচার হবে, সেরকম দাবী করছি না।
---- তবে যেনারা ইতিহাসের অভিমুখে নৃ্তত্ব এবং সেই সুত্রে জাতীয়তায় মানুষের পারস্পরিকতার অন্বেষন করে কিংবা বিপরীত দিক থেকে এই পারস্পরিকতার ভেতর দিয়ে জাতীয়তায়,  'মেহনত' সংক্রান্ত খন্ডিত সত্বাগুলিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা লেখক করছেন।
-----   সেখানে আলোচানাটি,    মোটা দাগের হলেও, নিশ্চিতভাবে একটি অখন্ড প্রতিরুপ দাড় করানোর চেষ্টা যে হচ্ছে  , পাঠকরা নিশ্চিতভাবে লক্ষ করেছেন বিবর্তনের ধারাতেই ভারতীয় জাতীয়তাবাদ বার বার বৃত্তচ্যুত হয়ে চলেছে।
----  সেখানে হয়তো বা, বর্তমানে ইতিহাস, জাতীয়তার সব উপাদানে লন্ডভন্ড ঘটিয়ে  আবার একটা বৃত্তচ্যুতির দিকে অথবা প্রতিবিপ্লবকে প্রতিহত করে , জাতীয়তাবাদের বৃত্তকে ইতিহাস নিজেই সম্পূর্ন করে নিচ্ছে। হয়তো এমনো ঘটতে পারে, এই বৃত্ত পূনঃর্গঠনে পুরো উপমহাদেশটাই নিজেকে যুক্ত করে নেবে। 

এতদসত্যেও তো মেনে চলতে হবে,
ভারতে  জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক  উপাদানগুলি,  সেই প্রথম নগর সভ্যতার কাল থেকেই সঞ্চিত হতে  শুরু হলেও, সেগুলিকে সম্ভবতঃ কোন সাধারন নিয়ম   হিসেবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ, পায় নাই। এইভাবে, প্রথম নগর সভ্যতার ভেংগে পরার পর
---- জাতীয়তার পূনঃনির্মান প্রকৃয়া শুধু বিড়ম্বিত নয়,  বিলম্বিত হওয়ার কারনে, হয়তো বা জাতীয়তার প্রজাতান্ত্রিক উত্তরনেও শুধু বিলম্বিত নয়, বিকৃ্তিও আসচ্যাঁ। প্রসংগত বুঝে নেওয়া উচিত হবে, ইতিহাস নির্মানের পথ উন্মুক্তির সাথে সাথেই জাতীয়তার উপাদানগুলি কাল ও স্থানের নিরিখে সংগঠিত হতে শুরু করলেও জাতীয়তার উপাদানে
-----  একপ্রান্তে পুজি এবং উৎপাদনের সম্পর্কগুলির সংঘাতে জাতীয়তা যখন  ক্রমে সামন্ততন্ত্রের  প্রজাতান্ত্রিক উত্তোরন ঘটায়, তখন সেই উপাদানে সামাজিক উৎপাদন এবং উৎপাদনের উপরে পুঁজির  আগ্রাসনের সংঘাতে, সামাজিক রুপান্তরের পথেই
------ জাতীয়তার উত্তোরোত্তর শক্তিবৃদ্ধির পথেই, প্রজাতন্ত্রের নতুন নতুন উত্তোরনের পথেই, সমাজতান্ত্রিক উত্তোরন ঘটে।ভারতীয় প্রজাতন্ত্র, চৈনিক প্রজাতন্ত্র এবং এক কালের সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের তফাৎগুলি এমনিভাবেই নির্ধারিত হয়।
যাইহোক ভারতের জন্য অতি-অতীতে জাতীয়তায়  কোন অজ্ঞাত কারনে জাতীয়তার সাথে ইতিহাসের এই বিখন্ডিকরনের পরবৈ্দিক সভ্যতা এবং জৈন/বুদ্ধবোধ সমুহের মিলনে যখন জাতীয়তার উন্মেষ ঘটতে শুরু করেছিলো, তখন
------ একপ্রান্তে  বৈ্দিক কালে, বর্ণাশ্রমের উপাদানগুলি জৈন এবং বৌদ্ধধর্মীয় ইতিবাচক উপাদানগুলিকে গ্রাস করতে শুরু করায়, বৌ্দ্ধ ধর্মে  রক্তশূণ্  রক্তশূণ্যতার কারন হয়ে দাড়ালো বটে,
-----  বৈদিক কালের সব ইতিবাচকতা মুছে গিয়ে, ব্রাহ্মন্যবাদ প্রতিকৃয়ার আবাসভূমী হয়ে উঠেছিলো, বৌদ্ধবাদের ইতিবাচকতা চলে গেলো বটে, ব্রাহ্মন্যবাদও ক্রমে বৃটিশ শাসনের কালে যুক্তিবাদী শিক্ষা এবং আধুনিক সমাজের উত্থান কালে সনাতনি নাম নিয়ে আবির্ভুত হয়েছিল ইতিহাসের খন্ডিতকরনকে এগিয়ে দিতে।
------ অবশ্য জৈন কিংবা বৌদ্ধ ধর্মকে ইতিহাসের দিক থেকে অনেকটাই অপ্রাসংগিক করে দেওয়ায়
------ মৌর্য্য এবং কুষান সাম্রাজ্যের পর,  উভয় ধর্ম থেকে রাজতন্ত্রের সমর্থন প্রত্যাহারো এদের পতনের বড় কারন। 

------  জৈন এবং বৌদ্ধ ধর্মের আত্মপ্রকাশ না ঘটা,   মৌর্য্য ও কনিষ্ককাল পর্য্যন্ত সরকারী সমর্থন থাকাকালিন সময় পর্য্যন্ত একপ্রান্তে বৌদ্ধবাদ, জীবনাভ্যাস হিসেবেই জাতীয়তার উপাদান বিকশিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
----   মনে হয়েছে, গভীরে গিয়ে দেখলে দেখা যাবে, সেই সময় বৌ্দ্ধ-জৈন বোধগুলি থেকেও বৈদিকবাদী, বর্ণাশ্রম নির্ভর ন্রাহ্মণ্যবাদ
------  একপ্রান্তে উপাদান আহরন করছিলো, অন্যপ্রান্তে বৌদ্ধ ধর্মের বিরুদ্ধে
এস্ফার-ওস্ফার লড়াই চালচ্ছিলো, ভেতর এবং বাইরের উভয় প্রান্ত থেকে। এইভাবে যে বৈ্দিককালের, অন্যান্য পশু সমেত  গো-ভক্ষনের সর্বভূক  হিসেবে বিবেচিতে থেকেও, রাতারাতি গো-ভক্তিতে সষ্টাঙ্গ  হয়ে থাকেন, তা নিশ্চিতভাবে জৈন এবং বৌ্দ্ধবাদের প্রভাব বলে বিবেচিত হবে।   

শেষ বিচারে, ১১০০ সাল নাগাদ
সুলতানী সাম্রাজ্য প্রতিষ্টার পরবর্প্রতী কালগুলি
ক্রমে প্রমান করয়েছে
--- ছিন্ন বিচ্ছিন্ন সাম্রাজ্যে, ব্রহ্মন্যবাদ বৌদ্ধবাদ থেকে বিপুল রসদ নিয়ে, সেই বৌদ্ধবাদের সামগ্রীক জীবনদর্শনকয়ে চূর্ণ করে দিয়ে,  সনাতনি ব্রাহ্মন্যবাদ নিজেই নিজেকে কালের গর্ভে নিশ্চিহ্ন হওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। (ক্রমশঃ)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours