অঙ্কিতা ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, পূর্ব বর্ধমান:

(বাবার জামায় শান্ত হতাম)

আমি যথারীতি আমার বাবা জর্জ বেকার বাড়িতে থাকতে শুরু করলাম। কিন্তু হয়তো আমার ভাগ্য সাথ দিল না। অবশেষে অর্পিতা চক্রবর্তী ও আমার সম্পর্ক গভীর শত্রুতায় পরিণত হলো। এই শত্রু তার জন্য আমার বাবা জর্জ বেকার আমাকে এক প্রকার চোখে চোখেই রাখতেন। কিন্তু এইভাবে কি এক পরিবারের শত্রু নিয়ে বাঁচা যায়?এই কথা ভেবে আমার বাবা জর্জ বেকার অর্পিতা চক্রবর্তী অর্থাৎ গৌরী মার কাছে স্থায়ীভাবে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু কোন বাচ্চা কি চায়? নিজের বাবাকে চোখের আড়ালে রাখতে? আমি খুবই কান্নাকাটি করতে লাগলাম। অবশেষে বুঝতে পারলাম একটি বাচ্চা মেয়ের মনের কথার কোন মূল্য থাকে না। তাই মুখ বন্ধ করে গৌরিদেবী সাথে গৌরী মার কাছে থাকতে লাগলাম।কিন্তু আমার মন সায় দেয় না তাই আমি প্রত্যহ কান্নাকাটি করতাম। আমার বাবা মাঝে মাঝে গৌরী চক্রবর্তীর বাড়ি আসতেন আমাকে দেখতে। গৌরী চক্রবর্তীর সাথে আমার বাবা জর্জ বেকার কিছুদিন থাকতেন আবার কিছুদিন পর চলেও যেতেন।কোথায় যেনো গৌরী চক্রবর্তীর সাথে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল আমার বাবা জর্জ বেকারের। বাবার অবর্তমানে আমি কান্নাকাটি করলে গৌরী মা আমার বাবার জর্জ বেকার এর জামা পড়ে আমার সামনে এসে দাঁড়াতেই তখন বাবার জামা দেখে আমি হয়তো কিছুক্ষণের জন্য শান্ত হতাম। আমার বাবা এইভাবে কিছুদিন আসতে থাকতেন কিন্তু সেটা বেশিদিন স্থায়িত্ব হয়নি। কারণ গৌরী চক্রবর্তী ও অর্পিতা চক্রবর্তী দুই বোনের মধ্যে অশান্তি ইতিমধ্যে লেগে গেছে আমার বাবা জর্জ বেকার কে নিয়ে। এরপর আমি এক প্রকার মন থেকেই মেনে নিয়েছিলাম যে আমাকে গৌরী মার কাছেই থাকতে হবে।
কিন্তু হঠাৎ একদিন অর্পিতা চক্রবর্তী তার নিজের বোনের সহিত দেখা করতে আসে। ঠিক সেই সময় আমার পুরানো স্মৃতি মনে পড়ে যায়। আমি আবার পুনরায় কান্নাকাটি করতে থাকি।আমার এটাও মনে পড়ে অর্পিতা চক্রবর্তী যখন গরিমার সাথে দেখা করে চলে যাচ্ছে তখন আমি গৌরি চক্রবর্তীর ভাড়া বাড়ির গ্রিল ধরে কান্নাকাটি করি। কিন্তু তাতেও মায়ের মনকে জাগ্রত করতে পারিনা। তখনতো আমার বয়স অনেক ছোট তাই অর্পিতা চক্রবর্তী কেই মা হিসেবে জানতাম।কিন্তু ভিতরে যে এত রহস্য আছে আমি তা জানতাম না।এরপর থেকে অর্পিতা চক্রবর্তী ঠিক একপ্রকার অভিনয় জগতের কৌশলে বুদ্ধি প্রয়োগ করতে থাকলেন। আমার জন্য হরলিক্স বা বেবি ফুড এর পরিবর্তে এক প্রকার ঔষধ বরাদ্দ হলো। যে ঔষধটি প্রয়োগ করলে আমার অতীত আমি ভুলে যায়।এর ফলে আমি আমার বাবা জর্জ বেকার এর মুখ ও অর্পিতা চক্রবর্তীর মুখ আমার মন থেকে মুছে যেতে শুরু করল। অর্পিতা চক্রবর্তী এই ধরনের কার্যকলাপ এ সাফল্য পেলেন।কিন্তু আমার মত একজন অসহায় মেয়ের  সবকিছু হারিয়ে গেল। আমার পিতৃ পরিচয়, আমার মাতৃ পরিচয়, আমার জীবন। আপনারাই বলুন আমি কি অপরাধ করেছিলাম,  আজ আমি যে প্রকার মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে জীবনে বেঁচে আছি তা কি কোন মানুষ এইভাবে বেঁচে থাকতে পারে?
আজ আমার মা প্রতিবাদী, নারীবাদী মহিলা তসলিমা নাসরিন। তিনিতো মহিলাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তাহলে আজ কেন তিনি চুপ? আর আমার বাবা জর্জ বেকার তিনিও তো একজন সাংসদ অর্থাৎ এই দেশের জনপ্রতিনিধি। তাহলে একজন জনপ্রতিনিধির এই ধরনের কার্যকলাপ কি সমর্থনযোগ্য? আমি তো শুধুমাত্র আমার বাবা ও মায়ের কাছে পিতৃ পরিচয় ও মাতৃ পরিচয় দাবি করছি। (ক্রমশ)

(প্রতিবেদনের যাবতীয় দায় লেখিকার)



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

1 comments so far,Add yours

  1. জয় নিশ্চয় হবে।স্বীকৃতি আদালতই দেবে।তথ্য গুলি ঠিক মতন Submit করতে হবে।আমার চ্যানেল ও সংবাদপত্র,বিশ্ববন্ধু সোসাইটি পাশে আছে পাশে থাকবে সত্য সন্ধানে।

    ReplyDelete