সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ:
রাঢ় বঙ্গের অন্যতম প্রাচীন পুজো বলতে শ্যামারূপার দুর্গাপুজো বাঙ্গালীর হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছে। বর্ধমান জেলার কাঁকসা থানার অধীন জঙ্গলমহলে এই পুজো হয়ে চলেছে অনন্তকালকে সাক্ষী রেখে। দেউলের পার্শ্ববর্তী শ্যামারূপার গড় বলে চিহ্নিত এলাকার প্রাচীন একটি মন্দিরে এই পুজো হয়ে থাকে নানান উপাচারের মাধ্যমে।
জনশ্রুতি আছে, এগারোশো বছরের এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ইছাই ঘোষ। তিনি গোপরাজ্যের সূচনা করেন বলে কথিত আছে। এই মন্দিরে পূর্বাবস্থায় ছিল সোনার তৈরি কনকদূর্গা। একইসঙ্গে ছিল কৃষ্ণমূর্তি। পরবর্তী পর্যায়ে কবি জয়দেব কৃষ্ণমূর্তিকে কেন্দুলিতে নিয়ে যান। সোনার কনকদুর্গাও চুরি হয়ে যায় সমকালীন সময়ে। তারপর থেকে পাথরের ছোট আকারের দুর্গাপ্রতিমার পুজো হয়ে আসছে এযাবৎ।
এই মন্দিরের দুর্গাপুজোয় স্বারম্ভর খুব একটা হয় না ঠিকই। তবে ঈতিহ্যের দিকে রাঢ়বঙ্গের শ্রেষ্ঠত্বের দাবি রাখে এই পুজো। প্রতি বছর পুজোর দিনগুলিতে বেলা বারোটার মধ্যে পুজো আচার পর্ব শেষ হয়ে যায়। বর্ধমান জেলার বহু দুর্গাপুজোয় অষ্টমীর পুজো আরম্ভ হয় শ্যামারূপার দুর্গাপ্রতিমার অষ্টমীর পুজো শেষ হবার পর মূহুর্তে। এমনও জনশ্রুতি হিসেবে শোনা যায় ইতিহাসের পাতায় খ্যাত লক্ষণ সেনও এই মন্দিরে এসে দুর্গার পুজো করে গিয়েছেন।
এহেন হাইপ্রোফাইল পুজোর পুরোহিত ভূতনাথ রায় বলেন, ‘গভীর জঙ্গলের মধ্যে এই দুর্গাপুজো হলেও এখানে প্রতিমা দেখতে জন সমাগম এত হয় যে তিল ধারণের যায়গা পাওয়া যায় না। এই রাজ্যের বহু অঞ্চল থেকে তো বটেই ভিন্ন রাজ্যের প্রবাসী বাঙ্গালীরা এখানে ছুটে আসেন এই পুজো দেখার উদ্দেশ্যে। রাজ্যের প্রাচীনতম এই পুজোর বৈশিষ্টতা ও ঐতিহাসিক পটভূমিটাই সাধারণ মানুষের কাছে প্রবল আকর্ষণের কারন হয়ে উঠেছে।’
Post A Comment:
0 comments so far,add yours