ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ রূপেন্দ্রনাথ ইতিমধ্যে কুসুমমঞ্জরীকে বিয়ে করেছেন! বিয়ের দুমাস পর আজ সস্ত্রীক বর্ধমান সদরে এসেছেন!এটাকে 'মধুচন্দ্রিমা' বলা সঙ্গত হবে না, কারন সেই সময় মধুচন্দ্রিমার খুব একটা চল ছিল না!বর্ধমানে আসার কারন, বর্ধমানের ধনী ব্যক্তিনগেন্দ্রনাথ দত্ত যিনি সরকারের বর্ধমানভুক্তির ইজারাদার তাঁর নায়েব নন্দদুলাল চ্যাটার্জী মারফৎ বিবাহের পর সস্ত্রীক বর্ধমানে আসার জন্য ভেষগাচার্য রূপেন্দ্রনাথকে নিমন্ত্রন করেন!
. নগেন্দ্রনাথের বয়স আনুমানিক পঞ্চাশ, সম্প্রতি তাঁর দ্বিতীয়া স্ত্রীর মস্তিষ্কবিকৃতির লক্ষ্মন দেখা দিয়েছে! ঝাড় -ফুক, তুকতাক, ওঝা, গুনিনের পর বর্ধমানের সব হেকিম বৈদ্য হাল ছেড়ে দেওয়ার পর , নন্দ চাটুজ্যের কাছে ভেষগাচার্য রূপেন্দ্রনাথের নাম শুনে তাঁকে আমন্ত্রন করেছেন!
নগেন্দ্রনাথের প্রথমা স্ত্রী তিনটি সন্তান রেখে সম্প্রতি মারা যাওয়ায় বাধ্য হয়ে দ্বিতীয়বার দারপরিগ্রহ করেন ছেলেগুলিকে মানুষ করার জন্য, কারন ছোট ছেলেটি নেহাত দুগ্ধপোষ্য!
নগেন্দ্রর প্রস্তাবে এককথায় রূপেন্দ্রনাথ রাজী হয়ে যাওয়ার দুটি কারন ছিল! প্রথমতঃ তাঁর ইচ্ছা ছিল বিবাহের পর ত্রিবেনী গিয়ে গুরুদেবের আর্শীবাদ নেওয়া আর কুসুমমঞ্জরীকে নিয়ে একবার নবদ্বীপ , শান্তিপুরে তীর্থ সেরে নেওয়ার সাথে বন্ধু ভারতচন্দ্রের সাথে সাক্ষাৎ করা!
দ্বিতীয় কারনটি হলো, রূপেন্দ্রনাথের সোঁয়াই -এ নিজের বাড়ীতে একখানি ঘর, আর বৈঠকখানা , ঘরটি জগুঠাকরুন আর কাত্যায়নীর দখলে ছিল, বৈঠকখানা বা চতুস্পাঠীতে রাতে থাকতেন রূপেন্দ্রনাথ! বর্তমানে সেটি কাত্যায়নী আর গঙ্গারামের দখলে! রূপেন্দ্র তাঁর নববধুকে নিয়ে থাকার কোন ঘর নেই!
এজন্য অবশ্য রূপেন্দ্রর কোন দুঃখ নেই, কারন তাঁর বোনটি স্বামী পেয়ে নতুন করে সংসার পেতেছে, এতেই খুব খুশী, কিন্তু কুসুমমঞ্জরীর জন্য দুঃখ হচ্ছে তাঁর নব বিবাহিতা হয়েও স্বামী সঙ্গ থেকে প্রায় বঞ্চিতা!
কিন্তু তাঁর বিবাহ হয়েছিল এলাহি জাঁকজমক সহকারে! ব্রজেন্দ্রনাথ তাঁর পালিতা কন্যার বিবাহে কোন ত্রুটি রাখেন নি!
তাঁদের বিয়ের পর ফুলসজ্জার রাতে ঘটল কৌতুককর কিন্তু বেদনাদায়ক ঘটনা!
( চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours