প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান: 

 ছুঁয়ে আছি শিশির সিক্ত দূর্বাদলে শব্দবন্ধনী। আধপোড়া ঈশ্বরের মতো দাঁড়িয়ে কুয়াশার দেশে; না, আর ফিরতে চাইছেন না দেহঘরে। চিরন্তন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে অবসর চাই তাঁর৷ মায়া কুয়াশার বুকে বেঘোরে দাপিয়ে বেড়ায় নিঃসঙ্গতা।  রবীন্দ্রনাথ যেন এক দগ্ধপুরুষ হয়ে উঠেছেন; কবচকুণ্ডল নেই, নেই বহুজন্মের সহবাসে গোপন আলেখ্য যাপন...  বিজনবাস চাই তাঁর। এও কি ভাবা যায়!!  লাজুক চেহারায় যখন ভাবগুলো দুইহাত বেয়ে আঙ্গুলে মাথা গুঁজে বলে, এই ছুঁয়ে যেও না আমায়..  এমন আজন্ম  শোকহীন লালচে গোপনীয়তা পিদিম জ্বেলে কবিও বলছেন লালন হয়েই তিনি ব্যতুক্রমী হতে চান৷ জলে ভিজে গেছে সম্ভাবনাময় দেহ, শিশির হয়ে আছে প্রাথমিকে খোলস খোলা শিল্পী হাওয়া..  বিজনবাস তাঁর৷ 

প্রতিটি বয়সের একটা নিজস্বতা আছে৷ নিঃশব্দে নিজের দায় স্বীকার করতে গেলে তো ব্যক্তিত্বের ধার থাকা প্রয়োজন। জং ধরা ঝাঁঝালো উচ্চারণে স্মৃতির দৃশ্যটুকু ছুঁয়ে দিলে স্মৃতি ভিক্ষা মনে হতেই পারে, তবু বলতে ইচ্ছা হয় - " গতস্য শোচনা নাস্তি "। আসলে বৃক্ষ তো এমনই হয়। মাথার উপর ছাতা ধরে আঁকড়ে থাকে পরিপুষ্টির হৃদয়ে৷ সে যে পথের কথা বলে। বীজ তো মাটির বাইরে এসে পরিপুষ্ট জীবনের পরিণতি নিয়েই শক্তিশালী হয়ে ওঠে৷ তবে কি ইন্দিরার এই বৃক্ষের বুকে অনেক অভিমান। পলি পড়ে আছে কি দুধের তলায় নকল তরল হিসাবে!!

ঋতুমাঠে নেমে কি কেবলই অন্তরের কাপালিক জেগে উঠবে বলে মনে হয়!!  পদ্মপাতায় স্বচ্ছতাকে ভালো লাগলেও কি শুকনো জরার খিদে আস্বাদন করতে ভালো লাগে!!  কোনোদিন না ; বরং কূল ছাপানো সংসর্গে শুদ্ধি তো প্রগতি। স্বাধীন তেজে আত্মরক্ষণক্ষম সবল ব্যক্তিত্বই তো ইচ্ছামতো খেলা।

দুই রুদ্ধ প্রাণী আজ অজস্র ঢেউয়ের তলে সূক্ষাতিসূক্ষ্ম অভিমান। নীরব রহস্যময়তা  
তবু বোঝাপড়ার যেন শেষ নেই। সদ্যস্নাত পৃথিবীর কান্নায় আছে তীরতল গ্রাম৷ বাসন্তী আঁচলে ভেজা কান্নার সুখ, কুন্তলের বুকে মেঘদূত মনে হয়। 

ঘুমন্ত শহরে একা ল্যাম্পপোস্ট যখন নিবিষ্টের আধার হয়ে দাঁড়ায়, তখন ভয় হয় ; অসহায় ডিঙি বেয়ে এক হয়ে যাচ্ছে মন৷ কবির এখন শেক্সপিয়ার নয়, রাগ ও স্বচ্ছতার তৎক্ষনাৎ আহ্লাদ শরীর বেয়ে সে কি আলোড়ন।  কাঁদছে ইন্দিরা, চতুর্দশীর চাঁদ উপচে সমর্পণ। In deep delved earth, হারিয়ে যাচ্ছে ইন্দিরা।  উষ্ণ জীবন্ত অনুরণন বব" ওরফে ইন্দিরার। পূর্বস্মৃতি ছায়া, প্রেত অতীত। আসলে জীবন্ত প্রভেদ বোঝা শক্ত৷ 

কবি এখানে প্রেমের সন্ধানী৷ সময়ের উপর অধিকার, অবসরে কাঁদে। আলস্যপূর্ণ অভিযান, নিমগ্নের গ্রাস৷ এরপর আসে, সবটুকু সমর্পণের পর খালি ঘটে ধুয়ে যাওয়া মৃত্যু অভিসার৷ নারী তো স্বচ্ছতাপূর্ণ সুবিস্তীর্ণের শান্তি। তিনি কি পেয়েছেন নারীর কাছে!!  স্বচ্ছ দিবালোক, নিভৃত অবসর, নিজস্ব তপোবন, আড়াল করা আবেদন। জীবন কড়িবরগা ছুঁয়ে কতো ভেদ এসেছে..  রূপকথার মায়ার জগৎ, এসেছে মালাবদল, বন্ধুত্ব, প্রেরণা ও স্বস্তি৷ এবার পরিণতির পটে সিঁদুরের জয়।বলতে ইচ্ছা করে  হতে পারে  "তোমার আমার মাঝখানে একটা পুকুর কাটা",  কিন্তু ডুব দিয়েছে সেই কোলের সন্তান, হ্যাঁ, মালাবদলের আশ্রয়। (ক্রমশ)



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours