ভবানী প্রসাদ ভট্টাচার্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ
রূপেন্দ্রর আদ্যান্ত বর্ননা শুনে ভারতচন্দ্র রূপেন্দ্রর রাজাদের মতকে সমর্থন করলেন! কারন তাঁর মতে, রূপেন্দ্রর বোন কাত্যায়নীর বয়স এখন ষোল বছর , রঙ্গীন শাড়ী পরে, মাছ খায়, স্বামী সুখ থেকে বন্চিতা কিন্তু সধবা!কিন্তু খোঁজ নিলে যদি জানা যায় তার স্বামী গত হয়েছে, তাহলে বিধবার জীবন যাপন করতে হবে!
রূপেন্দ্র ভারতচন্দ্রের মতকে উপেক্ষা না করে, নিজের মত ব্যক্ত করলেন," আমি শাস্ত্রের নির্দেশ মানি না, যখন তিনি নগরে এসেছি, খোঁজ নেব, যদি বেঁচে থাকে কাত্যায়নীর কাছে নিয়ে যাবো, আর মারা গেলে স্রেফ গোপন করবো! "
ভারতচন্দ্র রূপেন্দ্রর কথার মধ্যে যুক্তি খুঁজে পেয়েছেন ! সারা রাত কবি নিদ্রাহীন কাটালেন, ক্যাত্যায়নীকে কবি দেখেননি, কিন্তু তাঁর 'প্রথম ভালবাসা ' রাধার কথা সারা রাত মনে পড়লো , রাধার মধ্যে তিনি দেখতে পেলেন ক্যাত্যায়নীকে!
পরদিন কৃষ্ননগরের রাজা কৃষ্নচন্দ্রের রাজসভায় রূপেন্দ্রকে নিয়ে গেলেন সভকবি রায় গুনাকর ভারতচন্দ্র! রাজা ও সভাসদদের নিকট আলাপ করালেন রূপেন্দ্রর সাথে! রাজা তাঁকে কৃষ্ননগরে থাকার অনুরোধ করলে তিনি সবিনয়ে প্রত্যাখান করে জানালেন, তাঁর গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় কোন কবিরাজ নেই, তাদের সেবা করতে চান তিনি! রূপেন্দ্রর কথায় প্রীত হলেন রাজা!
এদিকে গোপনে. গুপ্তচর মারফৎ কাত্যায়নীর স্বামীর খোঁজ নিতে শুরু করেছেন ভারতচন্দ্র! রাজসভায় যাওয়ার পরদিন রূপেন্দ্র শান্তিপুরে অদ্বৈতাচার্য্যের ভিটে দেখতে চাইলে, ভারতচন্দ্র বাধা দিয়ে তাঁকে উলোঁ গ্রামে রোগী দেখতে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন!উলোঁ কোন ছোট গ্রাম বা গঞ্জ নয়, নয় একটি অতিপ্রাচীন ছোট শহর! সেখানে একটি রোগী দেখতে যাওয়ার জন্য ভারতচন্দ্র রূপেন্দ্রকে অনুরোধ করলেন!
রোগীটির সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারতচন্দ্র জানান," রোগী তাঁর অপরিচিত কিন্তু রূপেন্দ্রর পরিচিত!সাত আট বছর পূর্বে রুপেন্দ্র তাকে দেখেছেন, বর্তমানে তার একটি পা খোঁড়া! নাম তার গয়ারাম!
রোগী প্রকৃতপক্ষে রোগী গঙ্গাচরন, কাত্যায়নীর স্বামী! রূপেন্দ্রকে নিষেধ করলেও নিজে মহারাজের গুপ্তচর দিয়ে কাত্যায়নীর স্বামীর খোঁজ শুরু করেন! পোষিতভর্তৃকা কাত্যায়নীর মর্মবেদনা তাঁকে ব্যথিত করেছিল !তাঁর কাছে কাত্যায়নী আর রাধা একাত্ম হয়ে গেছিল!দুজনেই স্বামীর জন্য শবরীর প্রতিক্ষায় দিন গুনেছে!
(চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours