Bichar bohirvuto htya
দীপ্তি ইসলাম, লেখিকা, বাংলাদেশ : আমরা ইতিহাসে   এমন একটি শতক আজ পার করেছি, যেখানে সাহিত্যকর্ম সংকুচিত হচ্ছে নিদৃষ্ট ছকের মধ্যে। গদ্য কিংবা পদ্ম এর সারমর্ম বা বিষয়বস্তু অবশ্যই যেন হয় অলৌকিক শক্তি বা দেবদূতের স্মরণ রেখে। লক্ষ্য রাখতে হবে কোন লেখকেরই লেখনি যেন দেবদূতের মতের বিরুদ্ধে না যায়। এর বিপরীত ঘটলে নির্ঘাত অপমৃত্যু। যে মৃত্যু জাগতিক বিচার ব্যবস্থার ঊর্ধ্বে। বাঙালি সাহিত্যে এ ধারা চলতে থাকলে, সাহিত্য অঙ্গনে নেমে আসবে অন্ধকার। যে মাশুল গুনতে হবে হাজার বছর ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। সৃজনশীলতার শাখা-প্রশাখায় সৃষ্টি হবে নষ্ট শিল্পকলা।কপট সাম্প্রদায়িক ভাবাপন্ন প্রগতিশীলদের হাতে চলে যাবে শিল্প সাহিত্য ভাণ্ডার।পুরনো ভাবমূর্তিতে মননে রোপন হবে জরাজীর্ণ বীজ। এই বীজ থেকে যে ফসল ফলবে তা হবে নিরাময় হীন ব্যাধিতে আক্রান্ত। বাঙালি হবে মানুষের ভিতরে যা কিছু আদিম এবং পাশবিক তারই সমষ্টি। কতটা অতলস্পর্শী অধঃপতনের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি? মনের জমিনে করবো না আর কোন চাষাবাদ। বন্ধা মনন ভরে উঠুক আগাছা আর পরাগাছায়। আমরা বেড়ে উঠবো বিশ্ব বৃক্ষের মত পুরনো কে আঁকড়ে ধরে। ভাবনায় কথাই চলনে-বলনে হও গতানুগতিক। তবেই তোমরা বেঁচে যাবে কোনমতে জীবনটা নিয়ে। বিদেশে জীবন ও সভ্যতা নিয়ন্ত্রিত হয় মূলত সে দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক ও ধর্মনীতি দ্বারা। যদি কেউ এই নীতিদ্বয়ের উপর আরোপ করে যুক্তি, তর্ক, দর্শন এবং তা যদি রাজনীতির বিরুদ্ধে, সেক্ষেত্রে তাকে বলা হয় রাষ্ট্রদ্রোহী আর ধর্ম নীতির বিরুদ্ধে গেলে তাকে বলা হয় নাস্তিক। এই অপবাদের কলঙ্ক নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী কে সৌভাগ্যক্রমে যেতে হয় নির্বাসনে আর দুর্ভাগ্যক্রমে আস্তিক কে যেতে হয় নির্মম খুন এর মধ্যে দিয়ে না ফেরার দেশে। নির্বাসন মানে নিরাপদ আশ্রয় কারাবাস। সাধারণ অর্থে বিতর্কিত এবং প্রথাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য কোন দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ কে স্বদেশ থেকে বহিষ্কারাদেশেই নির্বাসন। নির্বাসন দুধরণের হয়, ১. স্বেচ্ছায় নির্বাসন ২. বাধ্যতামূলক নির্বাসন। সাধারণত মুক্তমনা বা প্রথা বিরোধী কবি সাহিত্যিক এবং অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদ্রোহী বা ধর্মীয় বিধি বিধানের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার কারণে, রাজনীতিকদের নির্বাসিত হতে হয়। আবার অনেক সময় অপরাধ তুলনামূলকভাবে কম হলে প্রচলিত আইনের আওতায় বিচার হয়। রাজনীতিবীদদের দেশের অবস্থা অনুকূলে থাকলে দেশে ফেরার সুযোগ থাকে, নির্বাসিত কবি সাহিত্যিকদের ক্ষেত্রে সে সুযোগ থাকে না বললেই চলে। নির্বাসিত জীবনে কারাবাস যত দীর্ঘ হতে থাকে ততই একজন লেখক এর জীবন বোধ হয় শোণিত এবং লেখালেখি ও মানে হয় অর্থবহ, যেমন সমসাময়িককালে বাংলাদেশের প্রথাবিরোধী লেখিকা তসলিমা নাসরিন প্রতিক্রিয়াশীল বা ফ্যাসিস্টদের প্রতিরোধের মুখে নির্বাসিত হন আমাদের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। সেখানেও উগ্র মৌলবাদীদের উৎপাতের কারণে পাড়ি জমাতে হয় ইউরোপ-আমেরিকায় যাই হোক কোন মতে প্রাণে তো বাঁচে। নির্বাচন চলাকালীন সময়ে লেখিকা তসলিমা নাসরিন রচনা করেছেন ছোটগল্প ব্রম্মপুত্রের পারে।গল্পটির প্রতি পাতায় পাতায় তার জন্মভূমির প্রতি টান আর গভীর মমত্ববোধ হৃদয়বিদারক ভাবে প্রকাশ পেয়েছে। প্রথাবিরোধী এই লেখিকা তার কলমের ব্যবহার করে নারীর সমান অধিকারের কথা বলেছেন। পুরুষশাসিত সমাজে নারীর মুক্তি চেয়েছেন। ব্যঙ্গাত্মকভাবে পুরুষের দ্বৈত বা ফ্যাসিস্ট নীতি উন্মোচন করেছেন তার লেখনীর মাধ্যমে। প্রথা পদ্ধতি বা শাস্ত্রীয় নিয়ম নীতি সমাজ ব্যবসার উপর আরোপ করা হয়। স্থান কাল পাত্র ভেদে এর আদর্শিক গভীরতা মাপা হয় না। আর বিবর্তনশীল পৃথিবীর সবকিছুই পরিবর্তনশীল এবং তা সময়ের প্রয়োজনেই ঘটে থাকে। এই অর্পিত নিয়ম নীতির সাথে আপোষ করেননি, অভ্যস্ত হতে পারেননি নারীবাদী এই লেখিকা। তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে গোটা বিশ্ব তথা বাংলায় ঝড় তুলেছিলেন কথিত ছলা কলার বিরুদ্ধে। আমরা যারা আমজনতা ভয়-ভীতি আর লজ্জার কারনে আপস করি কুসংস্কারের সাথে, অন্ধত্বের সাথে নীরবে-নিভৃতে তসলিমা ছিলেন তার ব্যতিক্রম। তিনি ভন্ডামি বনিতার সকল জাল ছিন্ন করেছেন। তিনি ছিলেন তার অবস্থান থেকে মানবিক, স্নেহশীল ও নির্ভীক। যিনি ভালোবাসেন বাংলার কাদা মাটি ,জল হাওয়া ,আলো ছায়া, মেঘ রোদ্দুর। গোটা মধ্য যুগ ধরে বস্তুনিষ্ঠ বিজ্ঞানী, মুক্ত চিন্তা ও দার্শনিকদের চার্চের অনুগত রাখতে যাজক মন্ডলীর চেষ্টার কোন অন্ত ছিল না। বিজ্ঞানমনস্ক বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের কর্ম তৎপরতার উপর সার্বক্ষণিক তীক্ষ্ণ নজর রাখা হতো। ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ কখনোই চাইতোনা বিজ্ঞান মুক্ত চিন্তা ও জ্ঞানের উপর প্রতিষ্ঠিত হোক। রজারবেকন (১২১৪-১২৯২) , যখন বললেন, পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষার মাধ্যমেই বিজ্ঞানের সত্যগুলো যাচাই করে দেখা উচিত, তখন এ ধরনের কথা চার্চের উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠে। এমন মনোভাব পোষণের জন্য বেকন চার্চ কর্তৃক তিরস্কৃত হন। এক পর্যায়ে বিকনে বক্তৃতা দেয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। যাজকরা বেকনের বিরুদ্ধে থাকা নানা অভিযোগ তদন্ত করেন এবং তাকে এক যুগ কাল ফ্রান্স ইসকন মঠে বন্দি করে রাখা হয়। দীর্ঘ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে অনেক লাঞ্ছনা, দমন-পীড়ন ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে নির্মিত হয়েছিল বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানমনস্ক তার ভিত্তি। খ্রিস্টপূর্ব যুগের শ্রেষ্ঠ প্রতিভা ছিলেন আর্কিমিডিস (খ্রি, ২৮৭- ২১২)। মুক্ত চিন্তক দর্শনের বিচারে তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত বিজ্ঞানী। বিজ্ঞান চর্চাকে তিনি ধর্মচিন্তার গোলকধাঁধায় ঢুকিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাননি। তিনি সিসিলির সায়রাকিউজ নগরের অধিবাসী ছিলেন। রোমান সৈন্যদের আক্রমণ থেকে এই নগর কে রক্ষা করার জন্য তিনি অনেক বৈজ্ঞানিক কলা কৌশল প্রয়োগ করেছিলেন। দীর্ঘ অবরোধের পর যখন সায়রা কিউজের পতন ঘটে তখন উন্মত্ত রোমক সৈন্যরা এই বিজ্ঞানীর শরীর বল চর্মের আঘাতে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয় এবং তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বিদুষী হাইপেশিয়া (৩৭০-৪১৫) যার বিজ্ঞানের অভিযাত্রা শেষ হয়ে গিয়েছিল 45 বছর বয়সে। গণিত জ্যোতির্বিদ্যা ও পদার্থবিদ্যার সহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় তাঁর সম্ভাবনাময় বিচরণ থামিয়ে দেয়ার মধ্যে দিয়ে প্রকৃতপক্ষে প্রাচীন বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা কে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জিরো ব্যক্তিত্বের অধিকারী নি হাইপেশিয়াকে তখনকার সময়ে সবচেয়ে অগ্রবর্তী নারী গণিতজ্ঞ বিবেচনা করা হতো। হাইপেশিয়াকে মাদাম কুরির পূর্ববর্তী সবচাইতে উল্লেখযোগ্য নারী বিজ্ঞানী বলে অভিহিত করা হয়। তিনি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আলেকজান্দ্রিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ছিলেন। খ্রিষ্টধর্মের বাহকদের বিবেচনায় হাইপেশিয়া ছিলেন এক উদ্যত রমণী, যিনি মানুষকে অক্লান্ত হবে বিজ্ঞানের শিক্ষা দিয়ে চলেছেন। নতুন বিজয়ী খ্রিস্ট ধর্মের প্রতি তার কোন আনুগত্যই নেই। হাইপেশিয়া ছিলেন ধর্মের বিপরীতে মুক্তচিন্তক ও বিজ্ঞান চেতনার অনুসারী। খ্রিষ্টধর্মের অবতারগণ মুক্তচিন্তক বিজ্ঞানীকে আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত করেছিল। হাইপেশিয়ার ভূমিকায় সে সময় আলেকজান্দ্রিয়ার আর্চ বিশপ সিরিল বিচলিত বোধ করেছিলেন।তিনি আশঙ্কা করলেন হাইপেশিয়ার প্রবল ব্যক্তিত্ব আর প্রযুক্তির সামনে খ্রিস্ট ধর্মের দার্শনিক দুর্বলতা টুকু উন্মোচিত হয়ে যেতে পারে। সিরি তাই বিলম্ব না করে হাইপেশিয়াকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন এবং সিরিয়ালের ধর্মান্ধ উগ্র শিষ্যরা হাইপেশিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করে। মাইকেল সার্বেটাস(১৫১১-১৫৫৩) রক্ত সংবহন সংক্রান্ত গ্যালন এর মতবাদে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। সার্ভিস অফ প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর বিদ্যার ছাত্র থাকাকালে অ্যান্ড্রিয়া ভেসালিয়াস এর ছিলেন।নিজের গ্রন্থে সার্বেটাস ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে আলোচনার সাথে সাথে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও শরীর স্থান সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে মতামত সংযোজন করেন। এই মতবাদের এক অংশে রক্ত সংবহন তত্ত্বের ব্যাপারে ভিন্নমত প্রকাশ করেন অপরাধ ছিল এই এতোটুকুই। সার্বেটাসকে যখন অভিযুক্ত করা হলো তখন তিনি রক্ত সংবহন সম্বন্ধে প্রকৃত সত্যটা প্রায় আবিষ্কার করতে যাচ্ছিলেন। তাকে দেওয়া হল চরম দণ্ড, বধ্যকাষ্ঠে বেঁধে দু'ঘণ্টা ধরে আগুনে ঝলসে মারা হয়েছিল। লুচিলিও ভানিনি (১৫৮৫-১৬১৯) নামের এক মুক্তচিন্তক ধর্ম আদালতের প্রবল প্রতাপের মুখে স্পর্ধা ভরে ঘোষণা করলেন জীবজগৎ পরিবর্তনশীল, মানুষ অলৌকিক ভাবে সৃষ্ট কোন প্রাণী নয়। বরং মানুষেরও উদ্ভব হয়েছে প্রকৃতির নিয়মেই। মানুষ ও প্রকৃতি সম্পর্কে এক ধরনের বস্তুবাদ ইমোশন ছিল সে সময় অত্যন্ত গর্হিত কাজ। ধর্ম রক্ষার প্রয়োজনে ভানিনিকে জীবন দিতে হয়েছিল। ধর্ম আদালতের নির্দেশে তাকে বধ্য কাষ্ঠে বেঁধে যথারীতি পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। সার্বেটাসকে পুড়িয়ে মারার অর্ধশতাধিক কাল পেরোনোর আগেই ব্রণ কে পুড়িয়ে মারল ধর্মান্ধ ক্যাথলিকরা। জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে দীর্ঘ অন্ধকার যুগের অবসান ঘটাতে জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ এর নতুন আলো জ্বেলেছিল যে দেশটি সেই ইতালিতে ১৫৪৮ সালে নোলা নামের এক ছোট শহরে জন্ম হয়েছি ব্রণোর। ব্রণর সত্য অন্বেষণ এর তীব্র আকাঙ্ক্ষা ও বিজ্ঞানমনস্কতা সেসময় অ্যারিস্টোটল পন্থী যাজক মন্ডলীর মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ধর্মগ্রন্থে যা আছে তা বিনা বিচারে মেনে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দেবার মত লোক ছিলেন না। কোপার্নিকাসের নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা তার ভাবনার জগতকে প্রসারিত করে দিল। পুরনো ভাবলেন এ মহাবিশ্বের সবকিছুই গতি ও পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে চলছে। কিন্তু এ ধরনের চিন্তা ছিল বাইবেলীয় ধর্ম বিশ্বাসের সঙ্গে একেবারে বিপরীত ধর্মী। ব্রন ও কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদ এর পাশাপাশি বিজ্ঞান ও দর্শন বিষয়ে নিজের মত প্রচার করে চললেন। তিনি লড়াই চালাতে লাগলেন অ্যারিস্টোটলের পুরনো স্থবির দর্শনের বিরুদ্ধে। বিজ্ঞানের নতুন চেতনা ছড়িয়ে দেয়ার ব্রত নিয়ে তিনি লড়াই চালিয়ে গেলেন। তিনি হয়ে উঠলেন ধর্ম কর্তৃপক্ষের চক্ষুশূল। যাজক মন্ডলী আতঙ্কের সাথে উপলব্ধি করল এভাবে যদি ব্রন ও তার বিজ্ঞান ও দর্শন প্রচার করতে থাকেন তাহলে মানুষের মন থেকে ধর্ম ভীতি চলে যাবে। যাজকদের সম্মান ও মর্যাদা আর টিকিয়ে রাখা যাবে না। যাজকদের ধর্ম আদালতের নির্দেশে নির্মম করে হত্যা করা হয় জিও দার্ন ব্রণ কে। ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে সে সময়ে ব্রণ কে পুড়িয়ে মারা হলো সে সময় আর একজন বিজ্ঞানী ইতালিতে বসেই বিশ্ব জগতের রহস্য উন্মোচনের নিরলস কাজ করে যাচ্ছিলেন। তিনি গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২)। নিজে ধর্ম বিশ্বাসী ছিলেন কিন্তু ক্রমেই তিনি মধ্যযুগীয় অন্ধবিশ্বাস ও অ্যারিস্টটলের অভিমতগুলো সম্পর্কে সংশয় পোষণ করেছিলেন। স্বাধীন মত প্রকাশ করা কতটা বিপদজনক ব্রণের নির্মম হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে তার প্রমাণ গ্যালিলিও পেয়েছিলেন। ১৬৩৩ সালে গ্যালিলিও কে ধর্ম আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল এবং তাকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গৃহবন্দি থেকে বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণা চালিয়ে যেতে হয়েছিল। ১৭৯২ সালে প্রকাশিত হয় নারীবাদী লেখিকা মেরি ওলস্টোনক্র্যাফট এর ভিন্ডিকেশন বইটি নারীবাদ এর প্রথম বিখ্যাত বইগুলো র মধ্যে একটি। সর্বশেষে মেরি হয়েছেন নারীকুলের সার্থক নারী মেরি এখন পাচ্ছে নারীবাদী স্বর্গের মহিমা যেমন সমাজতন্ত্রের মেরি তেমন নারীবাদে তার মৃত্যু প্রায় দেড় শতক পর দিশত জন্মবার্ষিকীতে অর্পিত হয়েছে পুষ্পার্ঘ্য। সিমোন দ্য বোভোয়ার ছিলেন একজন লেখক বুদ্ধিজীবী দার্শনিক রাজনৈতিক কর্মী নারীবাদী সমাজতত্ত্ববিদ তিনি প্যারিসে জন্মগ্রহণ করে প্যারিস এই দার্শনিক সারা বিশ্বের নারীবাদী চিন্তক এর উপর প্রভাব ফেলে দারিদ্রকে সঙ্গীর করে বেড়ে ওঠেন মায়ের দুঃখ কষ্ট দেখে ছেলেবেলাতেই বিয়ে না করার এবং অন্যান এবং ১৫ বছর বয়সে সিদ্ধান্ত নেন লেখক হবার বিখ্যাত দার্শনিক জলের সাথে তার বন্ধুত্ব। স্বেচ্ছা নির্বাসনে গিয়েছিলেন ইতালিয়ান লেখক দার্শনিক ওরিয়ানা ফালাচি রাজনৈতিক ও প্রতিক্রিয়াশীল কারণে আমেরিকা নিউ ইয়র্কে উদ্বাস্তু হয়ে ছিলেন নির্বাচন চলাকালীন তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। আবার কখনো কখনো সরকারের জনপ্রতিনিধি তাকিয়ে বিতর্কিত গ্রন্থ ব্যান্ড করে দেয় নির্বাসন সংস্কৃতিতেই নির্বাসিত জীবন টা বেজে যেত এই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও একটি নিরাপদ আশ্রয় নিল দীর্ঘ নির্বাসিত জীবনে সৃষ্টি করে ফেলত অসাধারণ সাহিত্যকর্ম সেই প্রাচীন থেকে আজকে একুশ শতকের প্রযুক্তিনির্ভর বাংলায় নির্বাচনের স্থান দখল করে নিয়েছে রাজ্য বাংলার আকাশে উড়ে বেড়ায় শকুনেরা জমিনে আত্মঘাতী হয় না ওরা ফাঁদ পেতে বসে আছে একটি একটি করে অনাগত ফোনের অপেক্ষায় অথচ এখনো ধুলোর সঙ্গে মিশে আছে মানবিক পায়ের চিহ্ন হুমায়ুন আজাদ এর লাশ অভিজাত এর মৃত্যু যন্ত্রনায় জ্বলে আছে নক্ষত্রের মতো কবিতা লেখা আছে ইতিহাসে পৃথিবীতে প্রচলিত মুক্তমঞ্চে রক্তের স্রোত আমাকে তাড়া করে কোন স্পর্শ কে যেন ছায়ার মত অনুসরণ করে আমার প্রধান কোচ শেষ হবে বুঝি আমার মুখের অগণিত প্রবল নৈঃশব্দ্য নির্জনতার নেমে আসবে আমার চিরচেনা চার দশকের বসতবাড়িতে।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours