google.com, pub-2412686623726664, DIRECT, f08c47fec0942fa0

গুরুত্বপূর্ণ খবর

google.com, pub-2412686623726664, DIRECT, f08c47fec0942fa0
সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ সারা দেশের লোকসভার ১৮তম সাধারণ নির্বাচনের দামামা ইতিমধ্যেই বাজতে শুরু করেছে। এমনই প্রাক মুহূর্তে ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতির মুকুটে সংযোজিত হল এক নতুন পালক। দেশে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয়ের পরিমাণ ৬৪,২৬৩ কোটি টাকা বা ৬৪২.৬৩ বিলিয়ন ডলার। যা এক সর্বকালীন রেকর্ড। বিশ্বের বাণিজ্যিক মানচিত্রে ভারত যে সাম্প্রতিক পৃথিবীর পুঁজিপতিদের পছন্দের মক্কা মদিনা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই কারণেই ভারত সম্পর্কে অতি উৎসুক মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কও অনেকটা ছুটেই আসছেন এই ভোট মরশুমের আবহের মধ্যেই। তিনি নিজেই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, 'এদেশে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে আমি খুবই উৎসুক।' খুব কিছু এদিক ওদিক না ঘটলে সম্ভবত চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই আমেরিকার বাসিন্দা তথা টেসলার কর্ণধার এদেশের মাটিতে পা রাখতে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ফলঃপ্রসূ হলে আমাদের দেশে ঘটবে এক আকাশচুম্বী বিনিয়োগ। অর্থাৎ টেসলার গাড়ি ভারতেই তৈরি করার ব্লুপ্রিন্ট রচনা হবে ৪,১৫০ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে। সুতরাং বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে ভারত যে আজ অন্যান্য দেশের কাছে অনেকটাই হট লিপ সম। উপরিউক্ত এহেন ভারতের সাম্প্রতিক আর্থিক জয়জয়কার সম্পর্কে সুদূর পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়াও কিন্তু যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। আর তারই আভাস পাওয়া গেল হিজ এক্সিলেন্সি অ্যাম্ব পিটার মুনিইরির আন্তরিক আবেদনে। ভারতে অবস্থিত কেনিয়া নিয়োজিত এই রাষ্ট্রদূত তাই কালক্ষেপ না করে তাঁর দেশে এদেশের সঙ্গে এরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের পুঁজিনিবেশের আমন্ত্রণ জানালেন দৃঢ়তার সঙ্গে। গত ৮ এপ্রিল বিকেলে কলকাতায় আয়োজিত হয়েছিল এক বণিকসভার আলোচনাচক্র। মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের স্থানীয় দফতরে। আর সেই বণিকসভায় সেদিনের মধ্যমনি ছিলেন রিপাবলিক অফ কেনিয়ার এই রাষ্ট্র প্রতিনিধি। এই বণিকসভার আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁর দেশের আর্থিক হালহকিকতের কথা উল্লেখ করেন হিজ এক্সিলেন্সি অ্যাম্ব পিটার মুনিইরি। তিনি বলেন, "কেনিয়াতে বর্তমানে বসবাস করেন ৫২.৪ মিলিয়ন মানুষ। দেশের ৮৫% আয় তথ্যপ্রযুক্তি ও সংযোগ টেকনোলজির মাধ্যমে সংগঠিত হচ্ছে অতি সম্প্রতি। ২০২২ সালে দেশের এফডিআই স্টক ছিল ১০.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা কেনিয়ার জিডিপির ৯.৫ % সুচকতূল্য। তবে দেশের ৭৫% মানুষ এখনও শ্রমদান করেন কৃষিক্ষেত্রে। অন্যদিকে চলতি দশকে নাইরোবির মোট জিডিপির ৬২% দাবিদার টেলিকম ও ফিনান্সিয়াল কার্যক্রম থেকে।" তিনি আরও বলেন, ভারত সহ পশ্চিমবঙ্গের পুঁজিপতিরা আমাদের দেশে আসুন। ব্যবসায়িক পর্যায়ে বিনিয়োগ করুন। নাইরোবির সরকার সর্বতো ভাবে আপনাদের স্বার্থ সুরক্ষিত করবে। সহজলভ্য এখানকার শ্রম। এই দেশের সঙ্গে রপ্তানি ও আমদানি করতে চাইলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ শুল্ক ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হয়। আমরা ভারতের ব্যবসায়ীদের জন্য অপেক্ষায় আছি। পরিশেষে এটা বলতেই হয় ভারত ও কেনিয়ার দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক সুযোগ এবং অবস্থানে পশ্চিমবঙ্গের পটভূমি শীর্ষক আলোচনায় নাইরোবির এই কূটনৈতিক কর্তার শরীরী ভাষা কিন্তু দীপ্ত ভঙ্গিতেই বারবার একটা আমন্ত্রণ জানান দিচ্ছিল, হে বঙ্গবাসী তথা ভারতবাসী বণিকগণ, আমার হাত ধরে নিয়ে চলো সখা। উপস্থিত ব্যবসায়ীরাও তখন হাততালি দিচ্ছিলেন মুহুর্মুহু। এই হাততালির অনুররণ কেনিয়ামুখী যে কতটা পৌঁছাবে তার পারদ-মিটার জানান ভবিষ্যতই দেবে। কারণ ব্যবসায়ীরাও বিলক্ষণ জানেন, বাণিজ্যে বসতেঃ লক্ষ্মীর আসল নির্যাসটা কি! (www.theoffnews.com - Kenya)
সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ: যাবো যাবো বসন্তের পড়ন্ত বিকেলের সূর্যাস্ত উপভোগ করছিলেন। বলতে গেলে একাকীই।ক্ষণিকের আবেগে মোবাইলে ক্যামেরা বন্দীও করলেন সেই অনিন্দ্য প্রাকৃতিক দৃশ্য। কলকাতার এক বহুতলের ঝাঁ চকচকে বহুতলের ব্যালকনি থেকে। চোস্ত হিন্দি বলতে পারেন। বাংলাও অল্পস্বল্প বোঝেন না এমনটা নয়। রবিকবির ভাষায় উনার পরিচয় জানতে গেলে অবশ্যই বলতে হয়, তুমি বিদেশিনী গো সুমন্দ ভাষিণী দূর দ্বীপবাসিনী। তাঁর নাম হার এক্সিলেন্সি ডানিয়েলা মারিয়ানা সেজোনভ তানে। তিনি ভারত সহ বাংলাদেশ ও নেপালে অবস্থিত রোমানিয়া দূতাবাসের বর্তমান রাষ্ট্রদূত। ভারতে অবস্থান কালে এই দেশের রাষ্ট্রভাষা হিন্দি যখন আত্মস্থ করেছেন তখনই তিনি নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেছেন, ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম। হয়তো তাই তীব্র ব্যস্ততার এক চিলতে অবসরে ভারত আকাশের সূর্যকে এভাবেই তাড়িয়ে তাড়িয়ে হৃদয় তন্ত্রীতে গেঁথে রাখছিলেন। এই রোমানিয়ান নন্দিনী বিলক্ষণ জানেন, বিশ্ব জুড়ে যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ঘোড়দৌড় চলছে ডিজিটাল ফরম্যাটে তাতে ভারত নামক এই সূর্যের দেশ হলো হালফিল বাজির কালো অশ্ব। এহেন মুহূর্তে ভারতীয় তেজি বুলের অবস্থান যে পৃথিবীতে পঞ্চম। চতুর্থ স্থান কব্জাগত করার জন্য ইতিমধ্যেই জাপানের ঘাড়ে তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে বিশ্বের এই সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশটি। আজকের ভারত যে আর্থিক বুনিয়াদে এক অতি শক্তিশালী বাণিজ্যিক পীঠস্থান তা উপলদ্ধি করেই বুখারেস্টের থিং ট্যাঙ্কের কর্তারা হয়তো এই দেশকে একটু বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে বসেছেন দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্রের নিরিখে। হয়তো তাই গত বুধবার রোমানিয়ার এই রাষ্ট্রদূত ভারত সূর্যকে লেন্সে সেফ করার ঠিক প্রাক মুহূর্তে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় পুঁজিপতিদের সঙ্গে। মহানগরের ভারত চেম্বার অফ কমার্সের নিজস্ব ভবণে। ওই বৈঠকের উপলক্ষ্য ছিল একটা আলোচনাচক্র। 'আর্থিক সহযোগিতা প্রেক্ষাপটে ভারত ও রোমানিয়ার বর্তমান এবং ভবিষ্যতের অবস্থান' শীর্ষকে। তবে আলোচনার উপলক্ষ্যের মঞ্চে অর্জুনের পাখির চোখের লক্ষ্য ছিল অমৃত মন্থন সম 'ভারতীয় বাণিজ্য'। যা অবশ্য খুল্লামখুল্লা স্বীকার করে নিয়েছেন ডানিয়েলা মারিয়ানা সেজোনভ তানে। বৈঠকে উপস্থিত ভারতীয় পুঁজিপতিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "ভারতের সঙ্গে রোমানিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও মজবুত করতে আন্তরিক ভাবে আমরা স্বচেষ্ট। আপনাদের আমাদের দেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভু্ক্ত এই দেশে আপনারা বিনিয়োগ করুন স্বচ্ছন্দে। আমরা আপনাদের সবরকমের সহায়তা করতে প্রস্তুত। রোমানিয়াতে অত্যাধুনিক বাণিজ্য সহায়ক পরিকাঠামো রয়েছে। বিভিন্ন খাতে সরকারি শুল্ক হ্রাসের ব্যবস্থাও আছে। আপনারা রোমানিয়াতে আসুন। আপনাদের পুঁজি আমাদের দেশে নিবেশ করুন শিল্প গঠনের জন্য। আপনাদের উৎপাদিত পন্য বিপননের জন্য বিরাট বাজার রয়েছে গোটা রোমানিয়া সহ সমগ্র ইউরোপ জুড়ে। বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে ইউরো নির্বিশেষে সবাই আয় করুন। এছাড়া ভারতের সঙ্গে রোমানিয়ার আমদানি ও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে দুই দেশ একযোগে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস রাখি।" এই বক্তব্যকে সমর্থন করে ভারতের রোমানিয়া দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক মন্ত্রকের দায়িত্ব প্রাপ্ত সেই দেশের মন্ত্রী ইয়োনুত ভিজিরু ওই আলোচনাচক্রে মন্তব্য করেন, "ভারতের সঙ্গে রোমানিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক ৭৫ বছরের। ২০০৪ সালে নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অর্জানাইজেনের (ন্যাটো) অন্তর্ভুক্ত হলেও এবং ২০০৭ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয়েও রোমানিয়া ভারতের বন্ধুত্বকে সর্বাগ্রে স্থান দিয়ে এসেছে বরাবর। রোমানিয়া আজ আবহাওয়া হাব হিসেবে বিশ্বে সুপরিচিত। এখানকার গড় তাপমাত্রা ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ইউরোপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাইসাইকেল উৎপাদন করেছে আমাদের দেশ ২০২২ সালে সংখ্যার নিরিখে ২.৬ মিলিয়ন তৈরি করে। ১৯ মিলিয়ন নাগরিকের এই ইউরোপীয় দেশে ২০২০ সালে কোভিডের মন্দায় আমাদের জিডিপির পতন ঘটেছিল ৩.৭%। ঠিক সেখান থেকে আমরা ২০২১ সালেই উল্লেখযোগ্য ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম ৫.৮% জিডিপির উচ্চমাত্রায়। রোমানিয়াতে ৮,৭০,০০০ টি কোম্পানি রয়েছে বর্তমানে যার মধ্যে বৈদেশিক কোম্পানির সংখ্যাই ২,৪৪,০০০ টি। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আওতাভুক্ত দেশগুলোর বাইরে বহির্বিশ্বের সঙ্গে ২০২৩ সালে রপ্তানি ব্যবসা করেছিলাম ১৪,৯৮৪.৫ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের। একই বছরে আমদানি ব্যবসা করেছি ১৮,৬৭৬.৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে। সুতরাং রোমানিয়ায় মাটিতেও ভারতীয় পুঁজিবাজার যে অত্যন্ত সুরক্ষিত তা হলফ করেই বলা যায়। ভারতীয়রা আমাদের দেশে বাণিজ্যিক লক্ষ্যে এগিয়ে আসুন। রোমানিয়া আপনাদের স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছে।" (www.theoffnews.com - Romania)
সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ: এ যেন মরা গাঙে ভরা জোয়ার। আসলে অবাক হতে হয় একটি চমকে যাওয়া তথ্য দেখে। এটাই যেন একটা মিথ। আমাদের রাজ্য যেন শিল্পের মরুভূমি। তবুও সরকারি নথি বলছে, বাংলায় মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের সংখ্যাটা নাকি ৯০ লক্ষ। আরও অবাক হতে হয়, যখন এহেন ৯০ লক্ষ শিল্পের পরিসংখ্যান জানান দেয়, উত্তরপ্রদেশের পর মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের নিরিখে সারা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এখানেই শেষ নয়। অবাক হওয়ার পালা আরও রয়েছে। কলকাতা চ্যাপ্টারের মিনিস্ট্রি অফ মাইক্রো, স্মল এন্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেস (এমএসএমই) এর জয়েন্ট ডিরেক্টর প্রদীপ কুমার দাস ব্যক্ত করলেন এক বিস্ফোরক শিল্প-আদমসুমারি। তিনি বলেন, "রাজ্যের দেওয়া তথ্য অনুসারে এই ৯০ লক্ষ শিল্পের মধ্যে এমএসএমই'র নথিভুক্তের সংখ্যা মাত্র ১০ লক্ষ। অর্থাৎ বাকি ৮০ লক্ষ রাজ্যের শিল্পের কোনও তথ্য বা হদিশ কেন্দ্রীয় সরকারের এমএসএমই দফতরের কাছে নেই।" এই অদ্ভুতুরে ৮০ লক্ষ বাংলার শিল্পের শিল্পকর্তাদের প্রতি তাঁর আহ্বান, এগিয়ে আসুন আপনারা। সরলীকৃত নিয়ম মেনে আপনারা এমএসএমই'এর নথিভুক্ত হোন। এমএসএমই'এর তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের বহু সহায়ক স্কিমের উপযোগী হন। আমরা আপনাদের সহায়তায় প্রস্তুত।" এই অবাক করার সুলুক সন্ধান পাওয়া গেল একটি মনোজ্ঞ আলোচনা চক্রে। মহানগরের হোটেল হিন্দুস্তান ইন্টারন্যাশানালে। গত ৪ এপ্রিল ২৪ তারিখের এই পরতে পরতে বিস্ময় খচিত আলোচনাচক্রের আয়োজক ছিল কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি বা সিআইআই। সেখানেই বক্তব্যের মাঝে প্রদীপ কুমার দাস আরও বলেন, "উদ্যোগপতিদের আবেদন করবো, এখনও যারা উদ্যোম রেজিস্ট্রেশন করাননি তাঁরা উদ্যোম রেজিস্ট্রেশন শীঘ্রই করিয়ে নিন। দেখবেন আশাতীত সরকারি সহায়তা ও প্রচুর পরিমাণে আর্থিক ছাড়ের সুযোগ পাবেন। এর ফলে আপনাদের উৎপাদিত পন্যে জন্য ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে। ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে আপনার বিক্রয়মূল্য সুবিধাজনক অবস্থান লাভ করবে অচিরেই। এছাড়া আমাদের কলকাতার দফতরে এক অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি গঠন করা হয়েছে। যেখানে পানীয় জল ও ফলজাত দ্রব্য ছাড়া সমস্ত রকমের পণ্যের মান অত্যন্ত সুচারু রূপে নির্ধারণ করা হয়। আর এখানকার শংসাপত্র দেশে ও বিদেশের যাবতীয় রপ্তানি ও আমদানি ব্যবসায় এক শক্তিশালী মান্যতার ভূমিকা পালন করে।" আয়োজক সংস্থার এমএসএমই কাউন্সিলের সর্বভারতীয় কো-চেয়ারম্যান এম পন্নুস্বামী আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, "এই রাজ্য এরকম অনেক শিল্পোদ্যোগীই আছে যাঁরা তাঁদের মাঝারি বা ক্ষুদ্র শিল্প গঠন করে বা করতে গিয়ে বহুবিধ জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন। আমার অনুরোধ আপনারা যোগাযোগ করুন সিআইআইয়ের এমএসএমই সাবকমিটির পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান রবি টোডির সঙ্গে। আশা করবো আপনাদের সমস্যা দূরীকরণের সঠিক দিশা উনি দেখাবেন।" এই বক্তব্যের সঙ্গে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে রবি টোডি উল্লেখ করেন, "দেশের পূর্বাঞ্চলের মাঝারি ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বলবো, শিল্প গঠন বা পরিচালনা করতে গিয়ে আপনারা একাধিক লাল ফিতের ফাঁদে পড়েন হামেশাই। আমাদের কাছে আসুন। সিআইআই আপনাদের সমস্যা নিরসনে পাশে আছে ও থাকবে।" কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ সামাজিক প্রভাব ও অন্তর্নিহিত বিক্রেতা বিকাশ বিভাগের চিফ ম্যানেজার অনুরাগ অগস্তি সিআইআই আয়োজিত এই ফোরামে এসে এক উল্লেখযোগ্য অ্যাপসের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। জেম অ্যাপস (GeM)। এর ওয়েবসাইটটি হল https://gem.gov.in/ । জেম কথাটির অর্থ হলো গভর্নমেন্ট ই- মার্কেটপ্লেস (Government e-Marketplace)। তাঁর মন্তব্য, এই অ্যাপস বা ওয়েবসাইটটি হলো বিনিয়োগকারীদের কাছে এক মনিমানিক্যের ভান্ডারের মতো অফুরন্ত খাজানা। দেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত এটা একটা উন্মুক্ত বাজার। যা ই-পরিষেবার সহজতম আধুনিক বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্ম। সরকারি যাবতীয় উৎপাদনের বিস্তারিত হাল হকিকত এখান থেকে জানা যেতে পারে। এখান থেকে বাণিজ্য বাস্তবায়িত করতে গেলে উৎপাদকের দফতরে দৌড়ানোর প্রয়োজনের দিন শেষ। নূন্যতম নথিতে ও একদম কম মূল্যে এর নবীকরণ সম্ভব। সবচেয়ে উৎসাহিত করার বিষয় হলো এই অ্যাপসের মাধ্যমে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ খুব সহজেই মিলবে ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলো থেকে যদি অর্ডার কপি আপনার সঙ্গে থাকে। এমনকি এর সাহায্যে প্রতিটি রাজ্যের সমস্ত জেলা স্তরে প্রত্যেকটা সরকারি নথিভুক্ত উৎপাদিত পণ্যের পুংখানুপুংখ জানতে পারা যাবে এই অ্যাপস থেকে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এমএসএমই'র ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ড ট্রাস্টের সিইও সন্দীপ ভার্মা এবার শোনালেন এবার এক করুণ বিস্ময়কর তথ্য। "যেখানে বিশ্বব্যাঙ্ক ভারতের কাছে অনুরোধ করেছে দেশীয় শিল্প বাণিজ্য প্রসারের ক্ষেত্রে ৪৫ লক্ষ কোটি টাকা ঋণপ্রদান করতে, সেখানে একই ক্ষেত্রে আমাদের দেশে এযাবৎ ঋণদান করা সম্ভব হয়েছে মাত্র ২৯ হাজার কোটি টাকা। সুতরাং বাণিজীকরণের খাতে ভারতের ঋণদানের পরিসংখ্যান প্রকৃতই প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট পিছিয়ে।" এমন নিরাশার উদ্বেগ শোনা গেল সন্দীপ ভার্মার কন্ঠে। তিনি অবশ্য বলেন, "এই নেতিবাচক পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা বহু স্থানে বহুবার ক্রেডিট ক্যাম্পের আয়োজন করে চলেছি ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের অধীনে। আমি মনে করি ঋণ গ্রহণের জন্য স্বচ্ছতা সর্বাগ্রে প্রয়োজন। এছাড়া ঋণ পরিশোধের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও স্বক্ষমতার মান উর্ত্তীণ হলে শিল্পোদ্যোগীদের ঋণ পেতে অসুবিধা হবার কথা নয়। (www.theoffnews.com - CII)
সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ: কলকাতার হায়াত রিজেন্সি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক মনোজ্ঞ বাণিজ্যিক সভা। বুধবারের এই সভার আয়োজন করে কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই)। আয়োজক বণিকসভার সর্বভারতীয় সভাপতি সঞ্জীব পুরীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সদস্য সদস্যাদের সরাসরি সংযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যেই এই উদ্যোগ। সারা দেশের সঙ্গে বিদেশেও বিশেষতর শিল্পপতি হিসেবে সঞ্জীব পুরীর পরিচয় অবিসংবাদিত। একাধারে তিনি আইটিসি কোম্পানির চেয়ারম্যানও। আলোচনাচক্রে প্রধান বক্তা হিসেবে সঞ্জীব পুরী বলেন, "ভারত বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল আগুয়ান অধ্যায়। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলোর যৌথ সমন্বয়ে দেশের আভ্যন্তরীণ পুঁজি বিনিয়োগেও বিপ্লব ঘটেছে। আর সিআইআই এহেন অগ্রগতির অনুঘটকের কাজ করে চলেছে নিরন্তর পর্যায়ে। আজকে ভারতের শক্তিশালী অর্থনৈতিক বুনিয়াদের এক অন্যতম মাইলফলক হলো আমাদের বণিকসভা সিআইআই।" বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিআইআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি আরও মন্তব্য করেন, "দেশের সার্বিক উন্নতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সিআইআইও এগিয়ে চলেছে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে। এটা একটা ক্রমবর্ধমান নিরলস প্রক্রিয়া। আমরা শুধু পুঁজি নিবেশকে উৎসাহিত করি না। এমনকি বিনিয়োগকারীদের হিত কামনায় স্রেফ নিজেদের নিয়োজিত করি না। দেশের মেধাকেও উপযুক্ত ক্ষেত্রে প্রয়োগ ঘটিয়ে দেশীয় বাণিজীকরণকেও উন্নততর করার চেষ্টায় মনোনিবেশ করেছি। শ্রমকেও যথাযথ মর্যাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে সিআইআই অঙ্গীকারবদ্ধ।" সঞ্জীব পুরীর বক্তব্যের শেষে শুরু হয় প্রশ্নত্তোর পর্ব। সিআইআইয়ের সদস্য সদস্যাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বাণিজ্য প্রসারের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করাটাই উন্নতির একমাত্র শর্ত হতে পারে না। দক্ষ পরিচালন ব্যবস্থার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, সুদূরপ্রসারী সদর্থক ব্যবসায়ীক দৃষ্টিভঙ্গি এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকের সুষ্ঠু মেলবন্ধনেই একটা বাণিজ্যে সাফল্য তরান্বিত হয়। সিআইআই বর্তমান বণিক দুনিয়ায় পুঁজিনিবেশের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের উর্ধ্বমুখী প্রসার ঘটাতেও বেশি মনোনিবেশ করেছে। কারণ সিআইআই বিশ্বাস করে, উন্নত সমাজে অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণের সার্বিক রসায়ণই হলো আধুনিক বাণিজ্যের এক উল্লেখযোগ্য জ্বালানি।" (www.theoffnews.com - CII Sanjiv Puri Hyatt Regency)
সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ: কথায় আছে বুধে পা। সেই বুধেই পা রাখতে হলো মহানগরের দি পার্ক হোটেলে। সেখানে যে আন্তঃদেশীয় বানিজ্যিক পদ্ধতি সরলীকরণ সম্পর্কিত সভার আয়োজন করেছিল ফিকি। সহযোগী উদ্যোগী ছিল দি ওরিয়েন্টাল চেম্বার অফ কমার্স। আলোচনার শিরোনাম ছিল "ওয়ার্কশপ অন এটিএ কার্নেট এন্ড ইউএন টিআইআর সিস্টেম"। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠে আসে এটিএ কার্নেট আবার কি? অন্যদিকে ইউএন টিআইআর সিস্টেম বলতেই বা কি বোঝায়? তবে অচিরেই সবকিছুই জলবৎ তরলং হয়ে গেল আলোচনাচক্রে অংশগ্রহণকারী বক্তাদের নাতিদীর্ঘ মতামতে। ফিকির ডিরেক্টর এস বিজয়লক্ষ্মী স্লাইড শো সহযোগে জানান, এটিএ কার্নেট হলো ফ্রেঞ্চ ও ইংরেজি শব্দের মিশ্রিত কথন 'অ্যাডমিশন টেম্পোরেয়ার/টেম্পোরারি অ্যাডমিশন'। ভারতের আভ্যন্তরিন এই এটিএ কার্নেটের ব্যবস্থার যাবতীয় তদারকি কাজ করে থাকে একমাত্র ফিকি। এটাকে মার্চেন্ডাইস পাসপোর্টও বলা হয়। এর ওয়েবসাইট হলো, www.atacarnet.in আর ইমেইল আইডি হলো, atacarnet@ficci.com । এটি এমন একটি আন্তর্জাতিক শুল্ক নথি যার সাহায্যে অস্থায়ী ভাবে বহির্বিশ্বের সঙ্গে রফতানি করা সম্ভব কোনও রকমের কর প্রদান ছাড়াই। যাঁরা বিদেশে বাণিজ্যিক প্রদর্শনী আয়োজন করেন এবং টেলিভিশন হাউস ও সিনেমা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এর সরাসরি উপকার গ্রহণ করতে পারেন। এমনকি ম্যানুফেকচারেরাও এর ফায়দা তুলতে পারবেন ট্রান্সপোর্টের ক্ষেত্রে। জুয়েলারি ও চর্মজাত পন্যও এর পরিষেবার আওতায় অন্তর্ভুক্ত। এটিএ কার্নেটের সহযোগে মূল পুঁজির লগ্নি হ্রাস পাবে। এছাড়া পেপার ওয়ার্কেও অনেক সরলীকরণ ঘটবে স্বল্প সময়ের মধ্যে। এই পরিষেবার মেয়াদ হলো এক বছরের। সারা পৃথিবীর ৭৫টি দেশের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত এটিএ কার্নেট পরিষেবা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। আপাতত এই পরিষেবার শুল্ক বন্দর ভারতের মধ্যে স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই, কলকাতা, কোচিন, আহমেদাবাদ, হায়দ্রাবাদ, ব্যাঙালুরু, নয়ডা, জয়পুর ও গোয়ায়। তিনি আরও জানান, এই এটিএ কার্নেটের মাধ্যমে খুব সহজেই বিভিন্ন পেশাদারী যন্ত্রাংশও আমাদের দেশে আমদানি করা সম্ভব ফিকির সহযোগিতায়। ওরিয়েন্টাল চেম্বার অফ কমার্সের কলকাতা চ্যাপ্টারের পূর্বতন সভাপতি সোইব আহমেদ ফইসাল তাঁর বক্তব্যের মধ্যে ইউএন টিআইআর কার্নেট প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন। কথাপ্রসঙ্গে তিনি ব্যক্ত করেছেন, টিআইআর কার্নেটের পূর্ণাঙ্গ ইংরেজি হলো 'ট্রান্সপোর্টস ইন্টার্ন্যাশানাক্স রয়টার্স' বা সহজ অর্থে ইন্টার্ন্যাশানাল রোড ট্রান্সপোর্ট। এটি একটি বিশেষ পরিষেবা যার মাধ্যমে রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈশ্বিক মাল্টিমডাল সীমান্ত পারাপার জনিত শুল্ক সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। এই সিস্টেমের মধ্যে শুল্ক কর সরলীকরণ বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আন্তঃদেশীয় সীমান্তের জটিল বিধিগুলোও লঘু করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক ও কর মন্ত্রকের তরফে ফিকি এই পরিষেবার গ্যারেন্টারের ভূমিকা পালন করে চলেছে। তিনি এও জানান, এই পরিষেবার ওয়েবসাইট হলো www.atacarnet.in/tir/tir.html এবং ইমেইল আইডি হলো tircarnet@ficci.com । এর মাধ্যমে আমদানী ও রপ্তানীর ক্ষেত্রে পন্য সরবরাহের ব্যাপক পরিমাণের ঝক্কি লাঘব করা সম্ভব হয়েছে। শুল্ক বিভাগের গুরুগম্ভীর বিধিতেও আমূল সহজীকরণ ঘটেছে। কার্গোর প্রসঙ্গেও আন্তর্জাতিক স্তরে উত্তরাংশ ও দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ভারতের পরিবহণ ব্যবস্থায় এক উল্লেখযোগ্য করিডোর স্থাপন হয়েছে বলে সোইব আহমেদ ফইসাল মন্তব্য করেন। (www.theoffnews.com - FICCI ATA Cornet UN TIR Cornet)
দি ব্যুরো (বাংলাদেশ), দ্য অফনিউজ, কলকাতা: রাজধানীর কাকরাইলস্থ হোটেল রাজমনি ঈসা খাঁ ব্যাংকুইট হলে ৯ মার্চ শনিবার বাংলাদেশ কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ফেডারেশন ও টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ (ট্রাব) এর উদ্যোগে ‘স্বাধীনতা সম্মাননা-২০২৪’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান ও মনোজ্ঞ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ মান্নান (এমপি) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ২০ জন গুনী ব্যক্তিকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। শাস্ত্রীয় যন্ত্র সঙ্গীতে আর্ন্তজাতিক ভাবে বিশেষ অবদানের জন্য এবছর বিশেষ সম্মাননা পান ভারতের সন্তুর শিল্পী পন্ডিত দিশারী চক্রবর্তী। এবছর তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ নাট্য একাদেমী থেকে নাটকের আবহ, সুর ও সঙ্গীত ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমী-২০২৪ সম্মাননা পেয়েছেন। ১৯৯৩ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে নরওয়ে থেকে আর্ন্তজাতিক পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে ইউএনও এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আর্ন্তজাতিক পুরস্কার লাভ করেন মাত্র ১০ বছর বয়সে। ১৯৯১ সালে তিনি ভারতের প্রেসিডেন্ট স্কলারশীপ লাভ করেন। পন্ডিত দিশারী চক্রবর্তী মূলত ধ্রুপদী শততন্ত্রী বীণা (সন্তুর) শিল্পী। পাশাপাশি তিনি সরোদ, তবলা, পাখোয়াজ, সেতার, এসরাজ, গিটার সহ আরও অনেক যন্ত্রে বিশেষ তালিম নিয়েছেন এবং বর্তমানে এসব যন্ত্রে শিক্ষা প্রদান করছেন। তিনি মাত্র ছয় বছর বয়স থেকে বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের বাড়িতে অর্থাৎ গুরুগৃহে থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে তালিম নিয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। (www.theoffnews.com - santoor Dishari Chakraborty)
দি ব্যুরো, দ্য অফনিউজ, কলকাতা: সুদীর্ঘ ৩৮ বছরের বর্ণময় সাংষ্কৃতিক কার্যকলাপে শিল্পাঞ্জলি এখন একটি সুপরিচিত নাম। ঐতিহ্যময় পুতুল আঙ্গিকের সঙ্গে আধুনিক পুতুল নাটক প্রদর্শনেও সমান দক্ষ শিল্পাঞ্জলির পুতুল শিল্পীরা। শুধু মাত্র পুতুল শিল্পকলার প্রদর্শনই নয়, এই প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলার প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুতুল শিল্পকলার শিক্ষা চর্চা এবং অনুশীলন নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে আসছেন শিল্পাঞ্জলির পুতুল বিভাগের শিক্ষক শঙ্খব্রত বিশ্বাস ও সোমা মজুমদার। এই উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে সম্প্রতি চাঁদপাড়া ঢাকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো পুতুল নাট্যকলার কর্মশালা এবং সেমিনার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইলা বাগচী, সভাপতি ,গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতি, প্রাক্তন শিক্ষক কালীপদ সরকার, প্রধান শিক্ষক রুইদাস কবিরাজ সবাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়, সাংবাদিক নীরেশ ভৌমিক, শিক্ষক শ্যামল বিশ্বাস, বিদ্যালয় পরিচালনা সমিতির সভাপতি, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুপম দে, বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক শিক্ষিকা এবং উক্ত বিদ্যালয়ের সকল ছাত্র ছাত্রী। এদিন অনুষ্ঠিত হলো সেমিনার 'সাংষ্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পরিচয় ঘটানোর পদ্ধতি'।বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষক অশোক পাল, ইছাপুর হাই স্কুল, বিশিষ্ট সাংবাদিক অলোক বিশ্বাস, প্রাক্তন শিক্ষক শ্যামল বিশ্বাস, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা প্রীতিলতা স্কুল শ্রাবনী মুখোপাধ্যায় এবং সেমিনারের সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন সুনীল বিশ্বাস, অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশরপাড়া কোদালিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সমগ্র বিষয়টি মলয় কুমার বিশ্বাস ও দীপালি বিশ্বাসের অভিভাবকত্বে সম্পন্ন হয়। পুতুল শিল্পকলার উৎপত্তি, ইতিহাস, বিস্তার ও প্রকারভেদ আলোচনার পাশাপাশি সব ধরনের পুতুল পরিচালনা পদ্ধতি তাদের প্রদর্শন করেন সংস্থার পুতুল বিভাগের শিক্ষিকা সোমা মজুমদার। পুতুল শিল্পকলার বিশেষ এক আঙ্গিক দন্ড পুতুলের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। হাতে-কলমে শিক্ষার্থীদের দন্ড পুতুল তৈরির কলা কৌশল শেখানো হয় এবং তাদের দিয়ে সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের উপর নির্মিত পুতুল নাটক 'বন্ধুত্ব' প্রযোজনা নির্মান করা হয়েছে। (www.theoffnews.com - puppet show)

সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ:

এখন সারা দেশ যেখানে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে বর্তমানের পাখির চোখ হিসেবে পরিগণিত করেছে, ঠিক সেখানেই উল্টো স্রোতে সাঁতার কেটে ভবিষ্যৎকে ভবিষ্যতের আর্থিক বুনিয়াদী দূরদৃষ্টির মান্যতা দিল কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই)'র পূর্বাঞ্চলীয় শাখা।

হ্যাঁ এমনটাই ঘটলো কলকাতার আইটিসি সোনার হোটেলে শনিবার সকাল থেকে সারাটা দুপুর। এক জমকালো আলোচনাচক্রের শীর্ষকের সাক্ষ্য থাকলো "ভবিষ্যতের প্রামান্যতায় ভবিষ্যতের প্রস্তুতি"। আয়োজনের শীলমোহরে জ্বলজ্বল করছিল ধারে ভারে ভারত শ্রেষ্ঠ একটিমাত্রই বণিকসভার নাম- সিআইআই।

"ভবিষ্যতের প্রামান্যতায় ভবিষ্যতের প্রস্তুতি"কে শুধুমাত্র নিয়মরক্ষার একটি আলোচনার পটভূমি হিসেবে বিশ্লেষণ করলে সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার এহেন সুদূরপ্রসারী উদ্যোগকে অবশ্যই খাটো করা হবে। আসলে এই চিন্তনযজ্ঞ হয়ে উঠেছিল স্বনির্ভর উন্নত ভারতের এক আর্থিক বিশ্বমার্গের চুড়ান্ত সাধন বেদী।

সিআইআই পূর্বাঞ্চলীয় শাখা যে বিকেন্দ্রীকরণের বরাবরই মসিহা তা অনুষ্ঠানের শুরুতেই বুঝিয়ে দিল। প্রারম্ভিক পর্যায়ের বিজনেস সেশনে প্রকাশিত হলো নিজস্ব ঘরাণার বার্ষিক রিপোর্ট। চলতি আর্থিক বছরের জন্য আভ্যন্তরিন নির্বাচন থেকে উঠে আসা নির্বাচিতদের নামও ঘোষণা হলো ডায়াস থেকে যথারীতি।

এরইমধ্যে আয়োজকের পক্ষে পূর্বাঞ্চলীয় সভাপতি শিব সিদ্ধান্ত নারায়ণ কল বলেন, "ভবিষ্যতে ভারতের আর্থিক ভিত্তি আরও মজবুত করার উদ্দেশ্যে সীমান্তবর্তী দেশের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্যকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিতেই হবে। একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষাকে মান্যতা দিয়ে শিল্পজাত কার্বণের নির্গমন মাত্রাকে পরিপূর্ণ নিম্নগামী করতে হবে উৎপাদনের নিরিখে। উৎপন্ন দ্রব্যের মান বজায় রাখতে হবে সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে।"

অন্যদিকে সিআইআইয়ের সভাপতি আর দীনেশ জানান, ভারত আজ ক্রমেই উন্নতশীল দেশের তকমা বর্জন করে এক উন্নত দেশের প্রবেশ দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। একইসঙ্গে বিশ্বের অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধির সূচকের ভিক্ট্রি পয়েন্টে পঞ্চম স্থান থেকে উঠে এসে জাপানকে সরিয়ে ভারতের চতুর্থ স্থান দখল করা শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। তিনি বলেন, "আমাদের দেশ অদূর ভবিষ্যতের পৃথিবীকে আর্থিক দিক থেকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। এমন মাহেন্দ্র মুহূর্তে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের ময়দানে সিআইআই সার্বিক ডিজিটালাইজেশনকে বাজির কালো ঘোড়া হিসেবে বিবেচনা করতে আরম্ভ করেছে।"

মূল উদ্যোগের একাধিক সেশনের আলোচনাচক্রের একটিতে মধ্যমনি হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নারায়ণ স্বরূপ নিগম। ভবিষ্যৎ উপলক্ষে তাঁর ইঙ্গিতবাহী বক্তব্য, "আজ আমাদের স্বপ্ন দেখার দিন। আমরা অগ্রগতির স্বপ্নে বিভোর থাকবো নাকি অগ্রগতির পশ্চাদপদের স্বপ্নে নেতিবাচক হবো, তা আমাদেরই উপর নির্ভর করছে ও করবেও। কিন্তু একটা কথা ধ্রুবতারার মতো সত্য। যে সত্যটা হলো কারিগরি, নির্মল পরিবেশ, তথ্যব্যাঙ্ক, বিনিয়োগ, যোগাযোগ, সামাজিক শ্রীবৃদ্ধি, দক্ষতা, মেধা, ভরসা, ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ জেট গতিতে এগিয়ে চলেছে সারা বিশ্ব জুড়ে। আগামীর অভিমুখে। ভারতও একই পথের শরিক। এখনই আমাদের তাই অবশ্যই ভাবতে হবে কোন ধরণের স্বপ্ন আমরা দেখবো?

সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় শাখা আয়োজিত "ভবিষ্যতের প্রামান্যতায় ভবিষ্যতের প্রস্তুতি" শীর্ষক অনুষ্ঠানে নারায়ণ স্বরূপ নিগমের এই উষ্কে দেওয়া 'কোন স্বপ্ন আমরা দেখবো' প্রশ্নটি উপস্থিত শ্রোতামন্ডলীর শ্রবনেন্দ্রীয়ে প্রবেশতো করলো, এটা ঠিকই। কারণ প্রেক্ষাগৃহে তখন পিন পতনের একাগ্র নিস্তব্ধতা। কিন্তু বোধগম্য হলো কি শ্রোতাদের? আগামীর ভারত নিশ্চিতভাবেই তা জানান দেবে। অপেক্ষা শুধু নিজস্বতার! অপেক্ষা স্রেফ আগত সময়ের!

(www.theoffnews.com - CII)

সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ:

খনার বচন বলে কথা 'মঙ্গলে ঊষা বুধে পা, যথা ইচ্ছা তথা যা'। সেই শুভ বুধবারেই সকাল গড়িয়ে দুপুর পর্যন্ত কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই)'র পশ্চিমবঙ্গ শাখা স্বইচ্ছায় পা রাখলো কলকাতার আভিজাত্য পূর্ণ হোটেল 'দি পার্ক'এ। উদ্দেশ্য যে এক  মনোজ্ঞ আলোচনাচক্র। তবে আলোচনার অভিমুখ ভিন্ন শীর্ষকে গাঁথা। কখনও আলোচনা চলছে সদ্য ঘটে যাওয়া সংস্থার রাজ্য কাউন্সিলের নির্বাচনের ফলাফল প্রসঙ্গে। প্রাতিষ্ঠানিক নানা শিল্পের নিরিখে কৃতিমান একাধিক বাণিজ্য সংস্থাকে দীর্ঘ সময় ধরে পুরস্কার প্রদান পর্বও চললো আয়োজকের তরফে। উপরি পাওনা হিসেবে তিন পর্যায়ে বাণিজ্য বসতে লক্ষ্মী ইস্যুতে মনোমুগ্ধকর প্যানেল ডিসকাসন বেশ নজর কাড়ে। কখনও আবার রাজ্যে শিল্পের সম্ভাবনা ও পুঁজি নিবেশের পরিবেশ নিয়েও আলোচনা করেন উপস্থিত একাধিক বক্তারা। যদিও একাধিক নির্ধারিত বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আলোচনাচক্রটি ছিল "রাজ্যের উন্নয়ন ভিত্তিক সুনাম, সম্ভবনা, উদ্ভাবন, পরিকাঠামো, পুঁজিনিবেশ ও ঐতিহ্যগত বৈশিষ্ট্যের অগ্রগতি ও তার মানচিত্র রূপায়ন।"

এমনই এক আয়োজন বহুল প্ল্যাটফর্মে আয়োজক সংস্থার উল্লেখযোগ্য কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও তত্ত্ব পূর্ণ বক্তব্য রাখেন সুচরিতা বসু, শিব সিদ্ধান্ত নারায়ণ কল, সন্দীপ কুমার প্রমূখ। তাঁরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে বলেন, "সমগ্র ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গও আজ আর্থিক ভাবে এগিয়ে চলেছে জেট গতিতে। সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের শোকেস হল এই রাজ্য। জাতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ভূমিকা এখন যথেষ্টই সদর্থক। পরিকাঠামোগত নির্মাণেও এই রাজ্য বর্তমানে একটা পৃথক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

এমনই এক মনোজ্ঞ আলোচনায় অংশ নেন রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য সহ শিশু এবং নারী উন্নয়ন মন্ত্রী শশী পাঁজা। পশ্চিমবঙ্গের অগ্রগতির প্রশ্নে পরোক্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, "এবারের বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকার সারা দেশের নিরিখে সামাজিক উন্নয়নের খাতে ২৬,০০০ কোটি টাকা ধার্য করেছে। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের নতুন বাজেটে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক উন্নয়নের বিষয়ে ব্যয় করা হবে ২৬,০০০ কোটি টাকা। সুতরাং এটা সবাইকে মেনে নেওয়ার সময় এসে গেছে যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তদারকিতে আমাদের রাজ্যে সামাজিক উন্নয়নের পটভূমিতে একটা নতুনতর সদর্থক বিপ্লব শুরু হয়েছে।" শশী পাঁজা আরও যোগ করেন, "এই রাজ্যে এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়ক, শিশু ও নারী, শিল্প বাণিজ্য এবং সামাজিক উন্নয়নে যথেষ্ট জোর দেওয়া হয়েছে।" তাঁর বক্তব্য, আর্থিক বিকাশের ক্ষেত্রে সমগ্র দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এখন চতুর্থতম আগুয়ান মাইলস্টোন হয়ে উঠেছে। পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে নতুন করে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে জঙ্গলনগরীর। সঙ্গে সেই অঞ্চলে একটি ইস্পাত কারখানা তৈরি করার রূপরেখা তৈরির কাজ চলছে। সবুজ সাথী প্রকল্পে উদ্দেশ্যে দিদির গ্যারান্টি হিসেবে পশ্চিম মেদিনীপুরে শীঘ্রই নির্মাণ হতে চলেছে সাইকেল প্রস্তুতকারক ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ উৎপাদন ভিত্তিক কারখানা। এছাড়াও তিনি সংযোজন করেন, "লজিস্টিক ক্ষেত্রে রাজ্য এক বিরাট পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই খাতে বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে আমরা দেড়শো মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ নিতে চলেছি। একইসঙ্গে রাজ্যে সবুজ বাণিজ্য করিডরের সহায়ক হিসেবে সড়ক, আকাশ ও রেল যোগাযোগ আরও উন্নতমানের করার কর্মযজ্ঞ ইতিমধ্যেই চলছে। এমনকি নিরবিচ্ছিন্ন জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করার বিষয়ে আমরা বিনিয়োগকারীদের নিশ্চিত করেছি।"

সিআইআইয়ের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের শিল্প উন্নয়ণ নিগমের চেয়ারপার্সন কাম ম্যানেজিং ডিরেক্টর রশনী সেন বলেন, "রাজ্যে বিনিয়োগ তরান্বিত করতে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন প্রয়োজন তেমনি দরকার পুঁজিপতিদের জন্য উপযুক্ত সামাজিক পরিবেশ। যেখানে ভয়হীন ও স্বজনপোষণহীন আবহ থাকবে। স্বল্প সময়সীমার মধ্যে নূন্যতম নথির মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগের ছাড়পত্র মঞ্জুর করতে হবে। লজিস্টিক ও এক্সপোর্টের ক্ষেত্রে অযথা কাঠিন্যের শিথিলতা আবশ্যক।" তিনি জানান যে পশ্চিমবঙ্গে এখন বিনিয়োগ বান্ধব ও শিল্প বান্ধব অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছে। বর্তমানে সারা রাজ্যে দুশোটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে উঠেছে। একুশটা স্পেশাল ইকোনমিক জোন তৈরি হয়েছে।

(www.theoffnews.com - seminar)

সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ:

রাজসূয় আলোচনার বিষয়বস্তু: "পশুসম্পদ পালন ও মৎস্য চাষ বিষয়ক কর্মসংস্থান এবং আয়বর্ধক আলোচনা" শীর্ষক সভা।

আয়োজকের ভূমিকায়: মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি নামক শতবর্ষ অতিক্রান্ত বণিকসভা।

সভাক্ষেত্র: কলকাতার ঐতিহ্যময় দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল।

ক্ষণকাল: মঙ্গলবারের বারবেলা বলতে অবশ্যই মধ্যাহ্ন লগ্ন।

আপাতত দৃষ্টিতে এই হলো আলোচনার আতসে সর্বাত্মক উঠে আসার নির্যাস। তাহলে বিবরণের বিস্তারিত ফর্দটাই বা কেমন তা নিয়ে কৌতুহল থাকতেই পারে। নির্ধারিত সময়ের কিছু পরেই ডায়াসে অলঙ্কিত করে বসলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী ও স্বপন দেবনাথ। প্রথমজন মৎস্য চাষ মন্ত্রকের মন্ত্রী। অপরজন মন্ত্রীত্ব সামলান প্রাণীসম্পদ দফতরের। যুগলের দুই পাশের আসনে বসলেন সংশ্লিষ্ট বণিকসভার কর্তাব্যক্তিরা। সঙ্গে আসীন ছিলেন এক মৎস্য রপ্তানীকারক।

যথারীতি বণিকসভার পক্ষে ভাষণ দেন নমিত বাজোরিয়া, অমিত কুমার সারাওগি ও মদনমোহন মাইতি। পর্যায়ক্রমে তাঁদের বক্তব্যের সারাংশ এটাই, প্রাণী সম্পদজাত উৎপাদনের হার বর্তমান ভারতের ধান উৎপাদনের মাত্রাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। দেশের খাদ্য স্বনির্ভরতা ও গ্রামীণ অর্থনীতির এক উল্লেখযোগ্য সূচক হলো প্রাণীসম্পদ প্রক্রিয়াকরণ। সম্প্রতি দুধ, ডিম, মাছ ও মাংস উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গ অন্যান্য রাজ্য থেকে একেবারে প্রথম সারিতে উঠে এসেছে। তাঁরা জানান, চীনের পর ভারত হলো বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ যারা সর্বোচ্চ পরিমাণ মাছ সারা পৃথিবীতে সরবরাহ করে থাকে। দুনিয়ার ৮ শতাংশ মাছ ভারত রপ্তানি করে বিভিন্ন দেশে। আর এখানেই এই রাজ্যে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ২০.৪৫ লক্ষ মাছ উৎপাদিত হয়েছে। সঙ্গে মৎস্যচারা উৎপন্নের সংখ্যা ২ হাজার ৭০০ কোটি। শুধু এই রাজ্য থেকেই ৫,০০০ কোটি টাকা মূল্যের ১.১৭ লক্ষ টন মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের আরও বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশের পর ডিম উৎপাদনে এই রাজ্য সারা দেশের মধ্যে এখন দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে।

বণিকসভার তরফে এমনতর মন্তব্যকে সরাসরি সমর্থন করে রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, "যেখানে চাকরির সুযোগ ক্রমশঃ জটিল হচ্ছে সেখানে বিকল্প কর্মসংস্থানের পরিসর নিয়ে সবাইকেই এগোতে হবে। স্বনির্ভরতার প্রশ্নে আমাদের রাজ্য সরকার এই বিষয়ে যথেষ্ট সংবেদনশীল। আর এমন পরিস্থিতিতে মৎস্য চাষ হলো কর্মসংস্থানের এক নির্ভরযোগ্য ভিত্তি।" তাঁর সংযোজন, "রাজ্য সরকারের মৎস্য মন্ত্রক দার্জিলিং বাদে সমগ্র রাজ্যের ৩৩৫ টি ব্লকে ৪০,০০০ জনকে বিজ্ঞান সম্মত মৎস্য চাষের প্রশিক্ষণ ইতিমধ্যেই দিয়েছে। মৎস্য উৎপাদন সহায়ক উন্নতমানের ল্যাবোরেটরি তৈরি হয়েছে জুনপুটে।"

মূলতঃ বিপ্লববাবু সহ বণিকসভার কুশীলবেরা যখন উচ্চগ্রামে রাজ্যের প্রাণীসম্পদ ও মৎস্য চাষের সাফল্যের একতরফা দামামা বাজিয়ে যাচ্ছিলেন তখন সেই আলোচনার ছন্দের আচমকাই তাল কেটে বসলেন রাজ্যেরই এক মৎস্য রপ্তানিকারক। বিপ্লববাবুর নিজস্ব জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা ওই মৎস্য রপ্তানিকারকের নাম মির মামরেজ আলী। রাজ্যের প্রাণী বিকাশের প্রসঙ্গে উপস্থিত সব বক্তারা ক্রমাগত সাফল্যের কাহারবা বাজালে কি হবে, তিনি তো হঠাৎই সবাইকে চমকে দিয়ে দাদরার বোল তুলে বসলেন। তিনি বলেন, "আমি শুরুতে খুব ছোট অবস্থায় মাছের খুচরো ব্যবসা করতাম। পরে ধীরে ধীরে ব্যবসা লাভজনক হতে থাকে। মাছের রপ্তানি শুরু করি একসময়ে। বিগত অর্থবছরে ৭০০ কোটি টাকা লেনদেন করেছি। ৩,০০০ জনের আয়ের সংস্থান করেছি। অথচ চলতি বছরে ব্যবসার হাল দুর্ভাগ্যজনক ভাবে নিম্নমুখী।" আক্ষেপের সুরে বলেন, "রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন হারে ধার্য করের অনুপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। তার উপর গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো রপ্তানিযোগ্য মাছের মূল্য থেকে সম্প্রতি স্থানীয় বাজারজাত সংগৃহীত মাছের মূল্য অস্বাভাবিক পর্যায়ে বেড়ে গিয়েছে। তাই আমার ব্যবসার লাভের ইমারত এখন ভেঙ্গে পরার মুখে। তবে আশা ছাড়িনি।"

আলোচনা সভায় রাজ্যের মৎস্য রপ্তানিতে এমন বিপরীতমুখী হালের ফিরিস্তি শুনে উপস্থিত শ্রোতারা যে স্তম্ভিত হয়েছেন তা কিন্তু বিলক্ষণ উপলব্ধি করেছিলেন রাজ্যের অপর পোড় খাওয়া মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তড়িঘড়ি পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি পোডিয়ামের সামনে এসে ওই মৎস্য রপ্তানিকারকের উদ্দেশ্যে বলেন, "ব্যবসায় তো একটু আধটু ওঠানামা থাকেই। এই ঝুঁকি তো নিতেই হয় সব ব্যবসায়ীকে। তবে আপনি চিন্তা করবেন না। রাজ্য সরকার আপনার পাশে রয়েছে। আমরা সর্বোতভাবে আপনাকে সাহায্য করবো।" এরপরেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি উৎসাহ ব্যঞ্জক পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "যাঁরা পশুপালনের জন্য খামার বানিয়ে উদ্যোগী হতে চান তাঁদের জন্য রাজ্য সরকার সহজ শর্তে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। সঙ্গে জমির মূল্যেও বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হবে।"

পরিশেষে এটা বলতেই হয় যে মন্ত্রীদের অজস্র সহস্র সদর্থক আশাব্যঞ্জক আর্থিক অগ্রগতির কথা শোনা গেলেও আলোচনাচক্রে কিন্তু সেই মৎস্য রপ্তানির অশনিসংকেত বিষয়ক দুধে চোনা পড়ার অধ্যায়টা শেষ অব্দি থেকেই গেল।

(www.theoffnews.com - seminar)

google.com, pub-2412686623726664, DIRECT, f08c47fec0942fa0